কলকাতা: আচমকা রাজভবনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ১০ মিনিট ধরে রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্র অনুসারে। যদিও নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের আজকের সাক্ষাৎ পুরোটাই সৌজন্যমূলক। তবে দুজনের মধ্যে কি বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে সে ব্যাপারে এখনো কিছুই জানা যায়নি। রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সংঘাত নতুন কোনো ব্যাপার নয়। এমনকি এদিনও বহিরাগত ইস্যু নিয়ে এবং রাজ্য সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যপাল। এই সংঘাতের আবহে এদিন হঠাৎ রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বারবার একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বারংবার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে তাঁকে আক্রমণ করে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন এমন অভিযোগও তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিকে আজ কোলাঘাটের সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল ফের একবার বহিরাগত ইস্যু এবং ঘূর্ণিঝড় থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মুখ খুলেছেন। এই সংঘাতের পরিবেশে হঠাৎ রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসা এবং রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে ঠিক কোন কোন বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তা এখনও জানা না গেলেও মনে করা হচ্ছে, সাক্ষাৎ হয়ে যাবার পর সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই হয়তো আসল ব্যাপারে জানা যাবে আজকের এই সৌজন্য সাক্ষাতের।
কোলাঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করে এদিন রাজ্যপাল বলেন, বাইরের রাজ্য থেকে কেউ পশ্চিমবাংলায় আসলে তাকে বহিরাগত বলা হচ্ছে। ভারতের মধ্যে কেউ বহিরাগত নয়। এমন ভাবা সংবিধানের মূল ধারণা কুঠারাঘাত করা বলে মন্তব্য করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সংবিধানের বিপরীত ভাবনার কোনও কাজ করা উচিত নয়। একইসঙ্গে আমফান প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য প্রশাসনের চূড়ান্ত সমালোচনা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। আগে থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল তা সত্ত্বেও কাজ করা হয়নি। কেন করা হয়নি সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একইসঙ্গে দাবি করেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর যে আর্থিক সাহায্যের কথা বলা হয়েছিল সেখানে দুর্নীতি হয়েছে।