কলকাতা: অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমপান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি৷ দুর্নীতি-স্বজনপোষণের অভিযোগও উঠেছিল বাংলার রাজনীতিতে৷ জেলায়-জেলায়, ব্লকে-ব্লকে উঠেছিল দুর্নীতির অভিযোগ৷ সরাসরি আঙুল উঠেছিল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ এবার সেই সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে নবান্ন থেকে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
দুর্নীতি স্বজনপোষণের অভিযোগ উড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিপূরণের টাকা বিলির প্রসঙ্গ তুলতে গিয়ে একশ্রেণির সংবাদমাধ্যমকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে জানিয়ে, ‘‘যারা এখনও বঞ্চিত হয়েছেন, বেশী না অল্প কিছু আছে৷ তাদের ন্যায্যগুলি দিয়ে দিন৷ এটা নিয়ে কিছু লোক আছে, সারাক্ষণ কাজ নেই, কর্ম নেই৷ টিভি চ্যানেল কীভাবে চালাবে, কাগজ কীভাবে চালাবে? সরকারের চোখে পড়ে না৷ ৯৯ শতাংশ জায়গায় লোকে পেয়ে গিয়েছে৷ আমরা একটু তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে কোথাও একটু ভুল হয়ে গিয়েছে কোথাও কোথাও৷ জেলাশাসকদের বলা হয়েছে, পুনরুদ্ধার করে ন্যায্য ঘটনা ঘটলে করে দেবেন৷ এখানে কোনো সমঝোতা করা হবে না৷ অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করা হয়েছে৷ এই সময়ে রাজনৈতিক দল বড্ড বেশি রাজনীতি করছে৷ রাজনীতি করে কোন লাভ নেই৷ নিজের দিকে তাকান৷’’
অনিয়ম প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা থাকতে কোন অন্যায় করতে দিই না৷ আমরা কোনও অন্যায় করব না৷ কিছু কিছু চ্যানেল আছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, একটা লোক হয়তো ওষুধ পেল না, সেটা নিয়ে সারাক্ষণ ধরে অনুপ্রেরণা, অনুপ্রেরণা করে চলেছে৷ আপনারা দয়া করে সংকট তৈরি করবেন না৷ আমি প্রেস মিডিয়ার কাছে অনুরোধ করবো, মানুষকে আতঙ্কিত করবেন না৷ মানুষকে ভয় দেখাবেন না৷ বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করবেন না৷’’
এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব, একদিন কথা বলে সবার সঙ্গে বসে আলোচনা করে নেবেন৷ আমি এই কথাগুলি আপনাদের সঙ্গে বলছি, এই কারণে অন্যায় নিশ্চয়ই আমরা যখন করব না, সে ক্ষেত্রে আপনাদের কাছেও অনুরোধ, সারা পৃথিবী জুড়ে যখন মহামারী চলছে, সেই মহামারীকে আমরা কোন ম্যাজিক বলে আটকে দিতে পারব না৷ আমাদের সচেতনতা সবথেকে বড় ম্যাজিক৷ আজও পর্যন্ত ওষুধ আবিষ্কার হল না৷ যতটুকু আমরা জোগাড় করতে পেরেছে, এই দু-তিন মাসের মধ্যে, সেখানে কেন্দ্র সরকার কিছু দেয়নি আমাদের৷ কিছু নিজেদের টাকা দিয়ে আর মানুষের টাকা দিয়ে এইতো হয়েছে৷’’
ফের সংবাদমাধ্যমের একাংশকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ কেউ প্রায় আসর পেতে বসে পড়েন৷ তাহলে তোমার মত কী? তাহলে তোমার মত? তাহলে কেন তুমি অক্সিজেন পেলে না? কেন চিকিৎসক চিকিৎসা দিলেন না? কেন এই হসপিটাল ঘুরিয়ে দিল? সারাক্ষণ আপনারা কেন নেগেটিভ করছেন? পজেটিভ করুন না! কোন রাজ্যে রকম হয় না৷ আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্র বেশি বলে এই জিনিসটা করা ঠিক নয়৷ আপনার টিভি চলুক, ভালো চলুক৷ আমার কোন আপত্তি নেই৷’’ এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা তো বিজেপির মতো নয়, নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিই, আমরা মিডিয়া বন্ধ করে দিয়ে আসি না৷ এটা আমাদের কাজ না৷’’