কলকাতা: লকডাউন কাটিয়ে শুরু হয়েছে আনলক পর্ব৷ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন৷ খুলে গিয়েছে অফিস৷ কিন্তু জনজীবন স্বাভাবিক হলেও পথে বেরিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের৷ কেননা পথে-ঘাটে বাস অপ্রতুল৷ আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কর্মীরা কীভাবে অফিস যাবেন? সেই সমস্যা মেটাতে সাইকেলের উপর আস্থা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিকল্প বাহন হিসেবে সাইকেলকে বিশেষ ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে পুলিশকে দেখে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কিছু কিছু রাস্তা আছে, বড় রাস্তার আশেপাশে, যাঁদের সাইকেল আছে, তাঁরা সাইকেলে করে অফিসে যেতে পারেন৷ বা অন্য কোন একটা কাজে যেতে পারেন কিংবা যাতায়াত করতে পারেন৷ সেই জন্য বিকল্প হিসাবে কলকাতা পুলিশকে বলা হয়েছে, আর গ্রামে সাইকেল তো চলেই৷ কলকাতা পুলিশ-সহ সমস্ত কমিশনারেটকে বলা হচ্ছে, তারা দেখে নিক, ঠিক করুক, কোন কোন জায়গায় সাইকেল চালালে অসুবিধা হবে না৷ যাঁর সাইকেল আছে৷’’
গণপরিবহণ সব কিছু চলছে বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘এখনও ৫ হাজার বাস চলছে৷ প্রচুর ট্যাক্সি চলছে৷ মিনিবাস অনেক চলছে৷ কিন্তু ট্রেন পরিষেবা বন্ধ৷ বড় গণপরিবহণ ব্যবস্থা৷ সেটা এখন বন্ধ আছে৷ কিন্তু এর মধ্যে অনেক সংস্থা খুলে গিয়েছে৷ অনেক বেসরকারি সংস্থা নিজেদের গাড়ি ব্যবহার করে৷ তেমন হলে, একটা অতিরিক্ত সর্তকতা দিতে হবে৷ যাদের আছে, তারা স্কুটার করে যেতে পারে৷ বাইক নেই সাইকেল আছে, তাঁরা সাইকেল ব্যবহার করতে পারেন৷ যার যা যা আছে সেটা আমরা অনুমতি দিচ্ছি৷’’
এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গ্রামে সাইকেল চলে৷ যে সমস্ত জায়গায় সাইকেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না, কারণ এখন যেহেতু রেল পরিষেবা চলছে না, আমরা হাজার পাঁচেক বাস চালাচ্ছি৷ অটো চলছে৷ বেসরকারি বাস চলছে৷ সবই চলছে৷ তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের একটা সমস্যা হচ্ছে৷ সেই জন্য কারও যদি সাইকেল থাকে, কলকাতা পুলিশকে বলা হয়েছে, একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেখুন৷ কোন কোন রাস্তায় গেলে দুর্ঘটনা ঘটবে না৷ দুর্ঘটনা ঘটার গ্যারান্টি দিতে পারি না৷ যাঁরা চালাবে তাঁদের দিতে হবে৷ সবাইকে দিতে হবে৷ আমরা সাইকেল চালাতে দিইনা, বড় রাস্তায়৷ একটাই কারণ, দুর্ঘটনা৷ কারণ বড় গাড়ি চলে৷ সাইকেলের জন্য আলাদা রাস্তা নেই৷ অন্য দেশে আলাদা রাস্তা আছে৷ আমাদের সেই ব্যবস্থা নেই৷ তাই ছোট ছোট কিছু মাঝারি কিছু রাস্তাগুলোর সংযোগ করে, বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়, বড় রাস্তাগুলিকে এড়িয়ে, কোন কোন রাস্তায় সাইকেল চালানো যায়, যাতে কর্মস্থলে যেতে পারেন, সেটা পুলিশ দেখে একটি নোটিফিকেশন করবে৷ পুলিশ নোটিফিকেশন করতে বলা হয়েছে৷ তবুও মনে রাখতে হবে, জীবন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ৷ একটু যেতে দেরি হলেও মহাভারত অশুদ্ধ হবে না৷ কিন্তু জীবন যদি চলে যায়, জীবনের দাম অনেক বেশি৷ সেইজন্য দুর্ঘটনা না হয় তার জন্য তাড়াহুড়ো করা যাবে না৷’’