কলকাতা: ‘খেল সম্মান’ অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের ক্লাবগুলির সমস্যা মেটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, প্রায় ২৬ হাজার ক্লাবকে আর্থিক সাহায্য দেয় রাজ্য৷ প্রথম বছর তিন লক্ষ টাকা এবং পরবর্তী তিন বছরে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়৷ খেলার সরঞ্জাম কেনার জন্য এই টাকা তাদের দেওয়া হয়৷ উপস্থিত ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়া হবে৷ তবে এই টাকা ক্লাবে পৌঁছে দেওয়া হবে ডিজি’র মাধ্যমে৷ কলকাতায় পুলিশ কমিশনারের মাধ্যমে টাকা পাবে ক্লাবগুলি৷ এর জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হবে না৷
শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে শুভেচ্ছা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি৷ পাশাপাশি আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য মোহনবাগানকে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান আমাদের গর্ব৷ এই ক্লাবগুলির টাকার প্রয়োজন আছে৷ ক্লাবগুলির হাতে বেশি টাকা নেই৷ মোহনবাগান টিম চালানোর জন্য ৭৫ শতাংশ টাকা পেয়ে গিয়েছে৷ ভালো করে খেলছে৷ কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের সমস্যা এখনও মেটেনি৷ মোহনবাগান পেরেছে, আশা করি ইস্টবেঙ্গলও খুব শীঘ্র এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলবে৷ আজ ২১ লক্ষ টাকার একটি টোকেন মানি দেওয়া হবে ইস্টবেঙ্গলকে৷ তিনি জানান, এর আগে তিনটে ক্লাবকেই ৫০ লক্ষ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ হাওড়ার ডুমুরজোলায় শৈলেন মান্নার নামে স্টেডিয়াম হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
তিনি আরও বলেন সমাজ গঠনে ক্লাবগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷ একটা ক্লাবই পারে এলাকাকে ভালো রাখতে শান্তিপূর্ণ রাখতে৷ নৈতিক চরিত্র গঠন করতে৷ মা বোনেদের সম্মান রক্ষা করতে৷ এলাকায় সবুজায়ন ঘটাতে, পরিষ্কার রাখতেও ভূমিকা পালন করে ক্লাবগুলি৷ সরকারেরও প্রচুর কাজ আছে৷ প্রচুর প্রকস্প আছে৷ যে সকল ক্লাব সেই কাজগুলো করতে চাইবে, তারা ডিএমএ-র কাছে বা বিডিও বা আইসি’র কাছে আবেদন জমা দেবেন৷
খেলরত্ন মঞ্চ থেকে করোনা নিয়েও বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, নোভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না৷ শুক্রবার ‘খেল সম্মান’ অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাবধানতা অবলম্বনের জন্য বড় জমায়েতে যাবেন না। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘কাশি মানেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ভাববেন না। যে কোনও ফ্লুয়ের ক্ষেত্রে এটা সাধারণ উপসর্গ। সব মশা কামড়ালে যেমন ডেঙ্গু হয়না৷ তেমন সব কাশি করোনা নয়৷ তবে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ যদি দীর্ঘ সময় ধরে আপনার উচ্চ তাপমাত্রা থাকে তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করান।''
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমি জানি এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন বেশি জ্বর থাকলে বাড়িতে ১৪ দিন বিশ্রাম নিতে, কারও সঙ্গে হাত মেলাবেন না৷ কারও সঙ্গে কথা বলার সময় পাঁচ মিটার দূরত্ব অবলম্বন করুন। হাঁচি বা কাশির সময় কনুই ভাঁজ করে মুখ আড়াল করে নিন৷'' তিনি আরও বলেন, আমি জানি না গরম বাড়লে করোনা সংক্রমণ কমবে কিনা৷ তবে অনেকে বলছেন গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমবে৷
এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওই অনুষ্ঠানে এসে এই কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। ওই স্টেডিয়ামে ১২,০০০ আসনসংখ্যা। এদিন তা পুরোপুরি ভরা ছিল। মমতা জানান, যেহেতু এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করোনা-আতঙ্ক শুরু হওয়ার আগে হয়েছিল, তাই তা বাতিল করা হয়নি। তবে অনুষ্ঠানটি কেটে ছোট করা হয়েছে বলে তিনি জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘খেলাকে কখনও বন্ধ করা যায় না। কিন্তু আমাদের এটাকে ছোট আকারে করতে হয়েছে, সাবধানতার সঙ্গে, সকলের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে।''