কলকাতা: নজরে ২১-এর নির্বাচন৷ বিধানসভা ভোটের আগে অবাঙালি ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে হিন্দি সেলের পুনর্গঠন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ হিন্দি অ্যাকাডেমির দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিলেন তিনি৷
এদিন নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের মাতৃভাষা বাংলা৷ কিন্তু আমরা অন্য ভাষাকে অবজ্ঞা করি না৷ বাংলা ভাষার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দি, উর্দু, অলচিকি, রাজবংশী, কান্তাপুরী সহ একাধিক ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ এর জন্য আমরা গর্বিত৷ আমাদের রাজ্যে বহু হিন্দিভাষী মানুষ বসবাস করেন৷ আমরাও হিন্দি ভাষাকে ভালোবাসি৷ তাই হিন্দি দিবসে হিন্দি অ্যাকাডেমি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার৷’’
আরও পড়ুন- মুক্ত বাতাসে কেমন হবে দুর্গা পুজোর মণ্ডপ? করোনা-বিধি-সহ বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
মুখ্যমন্ত্রী জানান, হিন্দি সেলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে৷ এছাড়া সেলের অন্যান্য সদস্যদের নামও এদিন ঘোষণা করেন মমতা। ২০১১ সালের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের তত্বাবধানে হিন্দি সেল গঠন করেঠিল রাজ্য সরকার৷ সেখানে হিন্দির পাশাপাশি উর্দু, সাঁওতালি, গোর্খা, রাজবংশি, কুরুক-সহ একাধিক ভাষাকে মান্যতা দেওয়া হয়৷ তবে এবার হিন্দির উপর বিশেষ জোড় দেওয়া হল৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হিন্দি ভাষা সাহিত্যের বিকাশের লক্ষ্যে, হিন্দি ভাষাকে সম্মান জানিয়েই এই পদক্ষেপ৷
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের রাজ্যে আগেই তৈরি হয়েছে রাজবংশী অ্যাকাডেমি৷ এবার পিছিয়ে পড়া ভাষাচর্চায় জোর দিতে ‘দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমি’ তৈরি করা হবে৷ এই অ্যাকাডেমিগুলি যাতে আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে তা দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে৷ এছাড়াও পাশাপাশি রাঢ় বাংলার মল্লভূম রাজাদের সময় পুরনো সংস্কৃত পাণ্ডুলিপিগুলিকে ডিজিটাইজড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
আরও পড়ুন- নজরে নির্বাচন: অবশেষে পুরোহিত ভাতা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
এই অ্যাকাডেমিগুলিকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া সরকারি সহযোগিতা, সাহায্য করা উচিত বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যাতে তাঁদের সাহিত্য আরও বিকশিত হতে পারে৷ দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমিতে বাংলার সকল তফশিলি জাতির সাহিত্যিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে বলেও জানানো হয়েছে৷ পিছিয়ে পড়া অন্যান্য গোষ্ঠীকেও সংযুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমি সাহিত্য চর্চা করবে৷ দলিতদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরা হবে৷ দলিত মণীষীদের রচনা প্রকাশ করা হবে৷
আজ ‘হিন্দি দিবসে’র শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিন্দি ভাষাকে আরও মর্যাদা দিতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার প্রতিও রাজ্য সরকার শ্রদ্ধাশীল বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। এরপরই বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে ফের সোচ্চার হন।