‘প্রতিদিন স্কুুল যেতে ভালো লাগে না’, সংসার চালাতে তরমুজ ফেরি ষষ্ঠ শ্রেণির খুদের

‘প্রতিদিন স্কুুল যেতে ভালো লাগে না’, সংসার চালাতে তরমুজ ফেরি ষষ্ঠ শ্রেণির খুদের

জলপাইগুড়ি:  করোনার দাপটে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল৷ অনলাইনে পড়াশোনা হলেও, বহু ছেলেমেয়েই তা থেকে বঞ্চিত থেকেছে৷ বেড়েছে দলে দলে স্কুল ছুটের সংখ্যা৷ বদলেছে বহু পড়ুয়াদের জীবন৷ তেমনই এক খুদের দেখা মিলল জলপাইগুড়ির রাস্তায়৷ ঠা-ঠা রোদের মাঝেই এক ভ্যান তরমুজ নিয়ে পসার সাজিয়েছে ১২ বছরের এক বালক৷ তীব্র গরম উপেক্ষা করেই কাজ করে চলেছে সে৷ 

আরও পড়ুন- মায়েদের মুখে হাসি ফোটাতে মাতৃ দিবসে অনন্য উদ্যোগ রাজ্য পুলিশের

তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র৷ বাংলা আর ইতিহাস পড়তে বেশ ভালোই লাগে তাঁর৷ কিন্তু প্রতিদিন স্কুল যেতে ভালো লাগে না৷ কিন্তু কেন? ওই বালকের কথায়, ‘‘আসলে করোনার জন্য অনেক দিন স্কুল বন্ধ ছিল৷ তখন স্কুলে যাইনি৷ তাই এখন আর স্কুলে যেতে ভালো লাগে না৷’’ ওই বালক জানায়, তার বাবাও তরমজু বিক্রি করেন৷ তিনি যান শহরের অন্য প্রান্তের এক বাজারে৷ ওই ছাত্রের মায়ের কথায়, ‘‘আশা ছিল ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করব। করোনা সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন,‘‘দু’বছর আগে লকডাউনের সময়ে কেরল থেকে কাজ ছেড়ে জলপাইগুড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন আমার স্বামী। তার পর থেকে তেমন কোনও কাজের সুযোগ আর আসেনি। বাধ্য হয়েই ছোট ছেলেটাকেও কাজে নামিয়েছি।’’ 

কাজের জন্য ছেলের পড়াশোনায় যে ক্ষতি হচ্ছে, তা বিলক্ষণ জানেন তার মা৷ কিন্তু তিনি নিরুপায়৷ তবে ওই ছাত্রের কথায়, ‘‘স্কুল তো এখন বন্ধ রয়েছে। তাই এই সময় তরমুজ বিক্রি করছি। আর সন্ধেয় বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ পড়াশোনা তো করি!’’ এই জলপাইগুড়ি শহরেরই দেখা মিলেছে দশম শ্রেণির এক ছাত্রের৷ সে এখন টোটো চালাচ্ছে৷ তার কথায়, ‘‘স্কুল যেতে এখন আর ভালো লাগে না৷ টোটো চালিয়ে বাড়ি ফিরে রাতে বই নিয়ে বসলেও আর মন লাগে না৷’’