কলকাতা: গত বছর জুন মাসের ২ জুন৷ ওই দিনের ভয়াবহ স্মৃতি আজও তাড়া করে বেরায় রবীন নাইয়ারকে৷ ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস৷ সেই অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন তিনি৷ দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন রবীন। এখনও ক্রাচ নিয়ে হাঁটা চলা করেন। তাঁর দুই ছেলেই পড়াশোনার ভালো৷ কিন্তু সংসারের জোয়াল টানতে তারাও নেমে পড়েছে কাজে৷ রবীন বললেন, ‘দু’ছেলে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে ঢুকেছে। একজন বাবার কাছে এর থেকে দুঃখেরআর কী হতে পারে?’
রবীনের দুই ছেলেই পড়াশোনায় ভালো। স্বপ্ন ছিল ছেলেদের পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করবেন। কিন্তু ভাগ্যের লিখন আজ পর্যন্ত কেউ পড়তে পারেনি৷ দুর্ঘটনায় রবীনের পায়ে ও কোমরে মারাত্মক আঘাত লেগেছিল। একটানা কয়েক মাস বিছানায় থাকার পর উঠে দাঁড়াতে পেরেছে৷ তবে ডান পায়ে এখনও ক্ষত৷ অস্ত্রোপচার প্রয়োজন৷ দুর্ঘটনার পর যে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছিলেন, তার সবটাই চিকিৎসা করাতে গিয়ে ফুরিয়েছে৷ রবীন জানান, দুর্ঘটনার পর তিনি পুরোপুরি অক্ষম। পেটের ভাত জোগাতে বড় ছেলে মাধ্যমিক পাশ করে কাঠের দোকানে কাজে ঢুকেছে। ছোট ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। সেও এখন মিষ্টির দোকানে কাজ করছে। ছেলেদের পড়াশোনা করানোর স্বপ্ন ছিল৷ তা আর পূরণ হল না৷ তিনি বলেন, ‘যন্ত্রণা বাড়লে মনে হয় দুর্ঘটনায় মারা গেলেই বোধহয় ভালো হতো।’