কলকাতা: যে ছবি এতদিনে বদলায়নি তা আজও বদলাল না। ১০৮ পুরসভার নির্বাচনে আজকেও একাধিক অশান্তির খবর এসেছে রাজ্যের কোণা কোণা থেকে। শাসক শিবির তৃণমূল কংগ্রেস যতই বলুক শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে, বিরোধীরা কিন্তু তাদের দাবি নস্যাৎ করছে। আর সংবাদমাধ্যমের বহু ক্যামেরায় যে চিত্র ধরা পড়েছে সারাদিনের তা কিন্তু অন্য কথাই বলছে।
আরও পড়ুন- রাশিয়ান হামলায় মৃত্যু বাড়ছে! হেল্পলাইন চালু করল ভারত
সকাল থেকে এই ভোট নিয়ে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। আর অশান্তির খবর এই প্রথম থেকেই আসতে শুরু করেছিল। যে সমস্ত জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছে সব জায়গায় হয় বিরোধীদের কেউ আক্রান্ত হয়েছে নাহলে নির্দল। রাজপুর সোনারপুর থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ি, বহরমপুর, মেদিনীপুর, ভাটপাড়া সব জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। রাজ্যের যে ২০টি জেলায় ভোট হয়েছে, বেশিরভাগ জায়গা থেকেই বিজেপি অভিযোগ করেছে যে তাদের কর্মী, প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আবার বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল কর্মী এবং প্রার্থীকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে দুই পক্ষই। বিরোধীরা বলছে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছে তারা, আবার তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র দাবি করেছেন, পুলিশ বিজেপির হয়ে কাজ করেছে, তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। পুলিশের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর মতো ঘটনাও আজ দেখেছে রাজ্যবাসী। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে পুরভোটে উত্তপ্ত হয় জয়নগর। সেখানের ডিসিআরসি সেন্টারের সামনেই দু’দফায় গুলি চলেছে বলে অভিযোগ৷ এলাকাবাসীরা জানান, প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। যার জেরে এলাকায় রীতিমত অশান্তি তৈরি হয়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দাবি, কোনও গুলি চলেনি৷ অন্যদিকে শান্তিপুরে জোর করে বুথের ভেতর ঢুকে বিরোধীদের বার করে ছাপ্পা ভোট করানোর অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ বাধা দিলে ‘বহিরাগতদের’ হাতাহাতি হয় পুলিশের সঙ্গে এবং বন্দুক কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় পুলিশের। ঘটনাটি শান্তিপুর পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের ১২৭ নম্বর বুথের।
আরও পড়ুন- বিকেল ৫ টার পরেই হকি খেলা হবে! কীসের ইঙ্গিত দিলেন ‘কেষ্ট’
শুধু এই ঘটনা নয়, রাজ্যের একাধিক জেলার একের পর এক সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন আজ। এবিপি আনন্দ থেকে শুরু করে জি ২৪ ঘণ্টা, টিভি৯ বাংলার সাংবাদিক, চিত্র সাংবাদিকরা মার খেয়েছেন বিশ্রীভাবে। তাদের হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল। সব ইস্যুর প্রেক্ষিতেই সোমবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে। ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে কাল বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে তারা। সকাল ৬ টা থেকে এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে। তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বাংলার ভোটে লাগামছাড়া হিংসা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। তার প্রতিবাদেই এই বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে তারা।