কলকাতা: লকডাউনে একের পর এক দুঃসংবাদ৷ বিনোদন জগতের পর এবার নক্ষত্রপতন ক্রীড়া জগতে৷ চলে গেলেন বাংলার ফুটবলের অভিভাবক চুনী গোস্বামী৷ বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন৷ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন৷ তাঁর ছেলে সুদীপ্ত গোস্বামী এই খবর দিয়েছেন৷ মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর৷ চুনী গোস্বামীর মৃত্যুতে ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া।
কিংবদন্তি এই ফুটবলারের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দিকপাল ফুটবলার শ্যাম থাপা, সুব্রত ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে ফুটবল জগতের বিশিষ্টজনেরা। আজীবন মোহনবাগানী হলেও লাল হলুদ শিবিরের কাছেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কিছু কম ছিল না। কিছুদিন আগেই প্রয়াত হন বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলের আর এক কিংবদন্তি ফুটবলার পিকে। সেই শোকের রেশ কাটিয়ে ওঠার আগেই বাঙালি ফুটবলপ্রেমিক পেল আরও এক দুঃসংবাদ।
বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যে কটি নাম চিরকাল জড়িয়ে থাকবে চুনী গোস্বামী তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বিনা তর্কে সকলেই স্বীকার করবেন বাংলা ফুটবলকে যাঁরা উচ্চতা এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন, সেই কুশীলবদের একজন চুনী গোস্বামী। প্রয়াত এই ফুটবলার ক্রিকেট মাঠেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন। বাংলা রঞ্জিদলে খেলেছেন।
আর ফুটবলে পারফরম্যান্স এক কথায় 'আনপুটডাউনেবল।' ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ – টানা ১৪ বছর খেলেছেন মোহনবাগানে। এশিয়ান গেমসে ভারতের সোনা জয় তাঁর হাত ধরেই। সেটা ১৮৬২ সাল। এর ছ' বছর বাদে অবসর নিলেও ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেননি। ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ছিলেন। বয়সজনিত কারণে মাঠের সঙ্গে শারীরিকভাবে সম্পর্ক না থাকলেও বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলের বিষয়ে খবরাখবর রাখতেন। যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন হল বৃহস্পতিবার। বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবল হল চুনীহীন। ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটেও তাঁর সাফল্য ঈর্ষণীয়৷ তাঁর অধিনায়কত্বে দু’বার রনজি ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল বাংলা৷ অল-রাউন্ডার হিসেবে তাঁর জনপ্রিয়তা তখন ময়দানে ময়দানে ছড়িয়ে গিয়েছে৷ বয়স বেড়ে যাওয়ায় জাতীয় দলের খেলার সুযোগ পাননি৷ বাংলার হয়ে টানা ৪৬ ম্যাচে ১৫৯২ রান করেছিলেন তিনি৷ বল হাতে ৪৭টি উইকেট ছিনিয়ে এনেছিলেন৷ ১৯৮৩ সালে ক্রীড়াক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্যের জন্য তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়া হয়৷