বর্ধমান: ভোটের মুখে বর্ধমানের রসিকপুরে বোমা বিস্ফোরণে সাত বছরের এক শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি৷ আজ সকালে বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে মৃত্যু হয় শিশুটির৷ গুরুতর জখম হয়েছে আরও একটি শিশু৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার৷ ভোটের আগে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে বলে দাবি বিরোধীদের৷ কী ভাবে বিস্ফোরণ ঘটল, সে বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ তবে এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে গোটা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল৷
আরও পড়ুন- ‘তৃণমূলের ইস্তেহার টুকলি করে ঠিকই করেছি’, দাবি শমীকের
এই ঘনার পরেই বাঁকুড়ার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বল ভেবে খেলতে গিয়ে আজ বোমার আঘাতে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷ আমি এখানে কাজ করলেও, অবিলম্বে তাদের পরিবারের খোঁজ নিতে বলেছি৷ আমি ওই শিশুটির পরিবারের পাশে আছি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাই বলুন, সমালোচনা করতে ছাড়েনি বিরোধীরা৷
বর্ধমানের ঘটনা প্রসঙ্গে তোপ দেগে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসগুলো বোমা তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে৷ আপনারাও বুঝতে পারছেন, খেলা হবে স্লোগান আসলে একটি হুমকি৷ মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা৷ একটা দল খেলা হবে স্লোগান দিয়ে গোটা বিষয়টি এই জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে না দেখলে বিশ্বাস হত না৷’’
এ প্রসঙ্গে শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের অধিকার চেয়ারপার্সন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা৷ একেবারেই অভিপ্রেত নয়৷ এর তীব্র নিন্দী জানাচ্ছি৷ সেই সঙ্গে খুবই চিন্তার বিষয়৷ তবে শুধু পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে আইনরক্ষা করা যায় না৷ নাগরিক সমাজকেও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে৷ জেলাশাসক এবং এসপি’কে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ কী হয়েছে এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা চানতে চাওয়া হয়েছে৷ আমরা আরও বেশি যত্নবান হব, যাতে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা না ঘটে৷’’
আরও পড়ুন- কেটে গিয়ে ধসে গেছে গোড়ালি, ছিঁড়েছে শিরাও! জানালেন আহত মমতা
এদিকে সৌগত রায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় খুবই দুঃখিত৷ একটা শিশুর মৃত্যু হয়েছে, এর চেয়ে দুঃখের আর কী হতে পারে৷ তবে এটা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়৷ কখন কোথায় বোমা ফাটবে তার দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে, এমন অভিযোগ বিজেপি’র মতো মস্তিষ্কহীন দলই করতে পারে৷ এখন তো আইন শৃঙ্খলা নির্বাচন কমিশনের হাতে, তারা অবিলম্বে তদন্ত করে কঠিন ব্যবস্থা নিক৷ সবকিছু রাজনৈতিক ভাবে হয়না৷ সমাজবিরোধীরাও নানা কারণে বোমা বাঁধে৷’’
অন্যদিকে, বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়৷ শাসকদল ক্ষমতার শক্তি দেখাচ্ছে৷ পয়সা আর ক্ষমতার দাপট দেখানো হচ্ছে৷ ক্ষমতা জাহির করা হচ্ছে৷ এখানে মানুষ বিপন্ন হচ্ছে৷ খেলা হবে, ভয়ঙ্কর খেলা হবে, এই কথায় মধ্যে দিয়েই আক্রমণাত্মক ভাব ফুটে উঠছে৷ বোমাবাজি নিয়েই কি বাংলা? একটা শিশুর প্রাণ চলে গেল৷ তাতেও কারও লজ্জা নেই৷ বাংলার বিবেক কোথায়? বুদ্ধিজীবী মানুষরাই বা কোথায়? ’’
আবার প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের যে নির্দেশগুলো রয়েছে, বোমা, বিস্ফোরক, অস্ত্র উদ্ধার সবটাই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল৷ প্রশাসনিক দক্ষতার অভাব রয়েছে৷