কলকাতা: ভোটের আগে এদিকে রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার৷ অন্যদিকে কর্মসংস্থান তৈরি নিয়েও তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল মমতার মন্ত্রিসভায়৷ এদিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে তা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আরও পড়ুন- দিতেই হবে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা, নির্বাচন কমিশনে ১২ দফা দাবি কর্মচারী সংগঠনের
বিরোধীদের মুখের উপর জবাব দিয়ে নিউটাউনের সিলিকন ভ্যালিতে ২০টি তথ্য প্রযুক্ত সংস্থাকে জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, এক বছর আগে এই সিলিকন ভ্যালির চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল৷ প্রথমে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার জন্য ১০০ একর জমি দেওয়া হয়েছিল৷ পরে আরও চাহিদা তৈরি হওয়ায় ফের ১০০ একর জমি সিলিকন ভ্যালিতে দেওয়া হয়েছে৷ এই তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ের কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরি হল বলেই উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, উইপ্রো অনেক ধরেই রাজ্য সরকারের কাছে জমির জন্য আবেদন জানাচ্ছিল৷ সেই আর্জি মেনে তাদের জমি দেওয়া হবে৷ এই জমিতে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা গড়ে তুলবে উইপ্রো৷ এছাড়াও ইনফোসিসকে রাজ্যের তরফে সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট সেন্টার করার আর্জি জানানো হয়েছে৷ তাতে সম্মতি জানিয়েছে ইনফোসিস৷ ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তাদের অ্যাপ্রুভাল প্ল্যান সাবমিট করবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ সবমিলিয়ে রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগের জোয়ার আসতে চলেছে বলেই জানান তিনি৷ সেই সঙ্গে তৈরি হবে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান৷ শুধু কলকাতাই নয় রাজ্যজুড়েই চলছে বিনিয়োগ৷ জলপাইগুড়িতে স্টার সিমেন্টের বড় প্রকল্পের জন্য জমি দেওয়া হয়েছে৷ সেখানে কারখানা হলে কাজ পাবেন স্থানীয় মানুষ৷
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, লকডাউনের কারণে ২৩ মার্চ থেকে সরকারি অফিস বন্ধ ছিল৷ ফলে অনেকেই খাজনা জমা দিতে পারেননি৷ ভূমি আইন অনুযায়ী বকেয়া খাজনা মেটাতে গেলে ৬.২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়৷ ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত বকেয়া খাজনা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সুদ মুকুব করা হল৷ অর্থাৎ বকেয়া খাজনায় জুন পর্যন্ত সুদ দিতে হবে না৷
আরও পড়ুন- টাকা নয়ছয়ের বিস্ফোরক অভিযোগ বৈশালীর বিরুদ্ধে! বালির পোস্টার ঘিরেও বিতর্ক
এছাড়াও দীর্ঘ লকডাউনের জেরে বহু মানুষ সমস্যায় পড়েছে৷ বিক্রি বাটা বন্ধ থাকায় আর্থিক অনটন তৈরি হয়েছে৷ এই সমস্যা কিছুটা লাঘব করতে ৬১৭টি মেলা ও প্রদর্শনী করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানান, এই সকল মেলা প্রদর্শনীতে ১৫৬ কোটি টাকার ব্যবসা বাণিজ্য হবে৷ এর ফলে ৩.৬৪ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে৷
এছাড়াও তিনি জানান, রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৪টি পস্কো আদালত আছে৷ আরও ৭টি প্রতিষ্ঠা করা হবে৷ রাজ্যজুড়ে ৪০টি পস্কো আদালত তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে৷ বাংলায় ৪৫টি ফাস্ট ট্র্যাক মহিলা কোর্ট করা হয়েছে৷ মানবাধিকার অধিকার আদালত রয়েছে ১৯টি৷ ৮৮টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট আছে৷ তাঁর কথায়, রাজ্যে অনেক কাজ করা হয়েছে৷ কোনও ক্ষেত্রেই কেউ বঞ্চিত নয়৷ বরং বাংলা বঞ্চিত দিল্লির কাছে৷ এছাড়াও নেতাজিকে সম্মান জানিয়ে মাঝের হাট সেতুর নাম বদলে জয়হিন্দ সেতু রাখার কথাও ঘোষণা করেন তিনি৷