গতবারের মতো এবারেও মহালয়ার আগে পুজোর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী! শুরু বিতর্ক

গতবারের মতো এবারেও মহালয়ার আগে পুজোর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী! শুরু বিতর্ক

chief minister

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। কোটি কোটি মানুষ এই উৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকেন। দূর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে কয়েকশো কোটি টাকার ব্যবসা হয়। যতদিন যাচ্ছে দেখা যাচ্ছে পুজো আর চারদিনে সীমাবদ্ধ থাকছে না। বস্তুত মহালয়া থেকেই পুজোর আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যজুড়ে। আর গতবারের মতো এবারও মুখ্যমন্ত্রীর পূজো উদ্বোধন করা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।

 

কারণ গতবারের মতো এবারেও  মহালয়ার আগেই, অর্থাৎ দেবীপক্ষ শুরুর আগেই বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যথারীতি বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শাসক দলের সমর্থকরা বলছেন এতে তো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। যদিও এর বিরোধিতা করছেন বহু মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী পায়ে চোট পেয়েছেন বলে এবার মণ্ডপে গিয়ে পুজো উদ্বোধন করতে পারেননি। পরিবর্তে বৃহস্পতিবার বিকেলে, অর্থাৎ মহালয়ার দু’দিন আগেই তিনি কালীঘাটে নিজের বাড়ি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব-সহ একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন। আর তাতেই ফের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে সমালোচনা করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,”সনাতন সংস্কৃতিতে দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট  পঞ্জিকাতে দেওয়া থাকে। বোধন, আরতি, পুষ্পাঞ্জলি ও বিসর্জন, সবকিছুতেই তারিখ ও দিন ধরে পঞ্জিকাতে বলে দেওয়া আছে। এটা বদলানোর ক্ষমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেই। পিতৃপক্ষে কোনও শুভ কাজ করা যায় না। মহালয়ার পরে মাতৃপক্ষে শুভ কাজ করা যায়৷” সেই সঙ্গে শুভেন্দুর কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রী পুজোকে কালচারাল অনুষ্ঠানে পরিণত করেছেন। বিরোধী দলনেতা যা বলেছেন সেটা অনেকেই বলছেন। মহালয়ার আগে কেন পুজোর উদ্বোধন হবে সেই প্রশ্ন উঠছে নানা মহল থেকে।

 

যদিও পাল্টা মতও রয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে  করিয়ে দিচ্ছেন, কলকাতা তথা রাজ্য জুড়ে অসংখ্য দুর্গা মন্দির আছে। সেখানে রোজ পুজো হয়। তবে কী পিতৃপক্ষে সেই সমস্ত দুর্গামন্দিরে দেবীর পুজো হয় না? এই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। যথারীতি মহালয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীর পুজোর উদ্বোধন ঘিরে এই চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

 

ঘটনা হল মাতৃপক্ষের শুরুতে দেবী মা’কে আবাহন করা হয়।  এরপর দশমীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। পঞ্জিকা মেনেই দিন তারিখ ঠিক করা হয়। বহু পুজো রয়েছে যেখানে রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো করা হয়। মহালয়ায়  দেবীপক্ষ পড়ার পর মা দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। এমনকী তার আগে মণ্ডপে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এই প্রথা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এই নিয়ম যারা মেনে চলেন তাঁরা মহালয়ার আগে পুজো উদ্বোধনকে মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু গতবার থেকে যেভাবে পুজোর উদ্বোধন মহালয়ার আগেঈ হয়ে যাচ্ছে তাতে আগামী দিনে এটাই বাংলার চেনা ছবি হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। সব মিলিয়ে বিতর্ককে সঙ্গী করেই বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রী হাত ধরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + nineteen =