কলকাতা: নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন এর মেয়াদ আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠকের সময় একথা ঘোষণা করেছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন ‘এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কে সমর্থন করেছে।প্রধানন্ত্রী লকডাউন বৃদ্ধির কথা বলেছেন ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। সেইমতো ৩০ এপ্রিলের পর এই বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে। যাতে করোনা সংক্রমিত হয়ে না পড়ে, তার জন্য কড়াকাড়ি থাকবে, কিন্তু বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিয়েছি আমরা।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন, আগামী ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল-কলেজ। লকডাউন থাকলেও সামাজিক দূরত্ব মেনে গম, তেলের মিল চালু থাকবে। খোলা থাকবে বেকারি। তিনি একইসঙ্গে বলেন, নবান্ন দুদিন বন্ধ থাকবে। কাল-পরশু অর্থাৎ রবি ও সোমবার নবান্নে স্যানিটাইজেশনের কাজ চলবে।অন্যদিকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। মৃত ও আহতদের বাদ দিয়ে বর্তমানে ৯৫ জন আক্রান্ত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। নতুন কোন মৃত্যুর খবর নেই। অন্যদিকে করোনা প্রতিরোধে রাজ্য সরকারের গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য অভিজিত্ চৌধুরী জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গে আক্রান্ত তিনজন করোনা আক্রান্তই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
তবে করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়লেও রাজ্যের মানুষের আশঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই বলে এদিন আশ্বস্থ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি করোনা সংক্রমনের ক্ষেত্রে যে সব বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ যায়গা বা হটস্পটকে চিহ্নিত করা হয়েছে সেই এলাকাও সম্পূর্ণ সিল করা হবে না।সেখানেও মুদির দোকান ওষুধের দোকানের মত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও পরিষেবা চালু রাখা হবে । তবে মানুষের জমায়েতের ওপর আরো কড়া ভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে বেকারি তেল কল, চাল কল গুলিকে আবার চালু করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন। ২৫ শতাংশ শ্রমিককে নিয়ে চা বাগানগুলো কাজ করতে পারবে।হোম ডেলিভারি সংস্থা কেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে।তবে সর্বত্র সুরক্ষা বিধি মেনেই কাজ করতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতে রাজ্যের স্কুল কলেজ গুলি ১০ ই জুন পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। জুন মাস পর্যন্ত মিড ডে মিল প্রকল্পের বরাদ্দ পড়ুয়াদের কাছে পৌছে দিতে তিনি প্রশাসনকে অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী এক সপ্তাহ সময়কাল খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সময় সকলকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। লকডাউনের নিয়ম আরও কড়া ভাবে মেনে চলতে হবে।