BREAKING: ভোটের মুখে ছত্রধর-মামলায় নয়া মোড়, নির্বাচনে অবাধ বিচরণ!

BREAKING: ভোটের মুখে ছত্রধর-মামলায় নয়া মোড়, নির্বাচনে অবাধ বিচরণ!

386a7167317e0c44c08806ba8fe12ce5

কলকাতা: দুয়ারে নির্বাচন৷ ভোটের মুখে কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় স্বস্তি পেলেন রাজধানী এক্সপ্রেস অপহরণ, সিপিআইএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুন-সহ দেশদ্রোহী মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ছত্রধর মাহাতো৷ আগামী ২৪ তারিখ পর্যন্ত কলকাতার বাইরে এবং পশ্চিমবঙ্গে যেকোনও প্রান্তে যেতে কোনও বাধা রইল না ছত্রধর মাহাতোর৷

রাজ্যের যেকোনও জায়গায় ছত্রধর মাহাতো যেতে পারবেন, পাশাপাশি যদি পশ্চিম বাংলার বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছত্রধর মাহাতোকে কলকাতার এনআইএর বিশেষ আদালতে অনুমতি নিতে হবে বলে নির্দেশ প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের৷ NIA আদালতে অনুমতি ছাড়া রাজ্যের বাইরে যেতে পারবেন না ছত্রধর৷ অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ আগামী ২৪ মার্চ পরবর্তী শুনানি৷ জঙ্গলমহলে নাশকতার অভিযোগে ছত্রধরের গ্রেফতারি চেয়েছিল এনআইএ৷ এনআইএ আদালত তা খারিজ করায় হাইকোর্টে আসে এনআইএ৷ ছত্রধরকে পুনরায় গ্রেফতারের পক্ষে সওয়াল করে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল৷ ছত্রধরদের আদালতে যুক্তি, জামিনে মুক্ত ছত্রধরকে গ্রেফতার করতে গেলে আগে জামিন খারিজ চেয়ে আবেদন করতে হবে এনআইএকে৷

গতবছর ২২ সেপ্টেম্বর এনআইয়ের বিশেষ আদালতে ছত্রধর মাহাতো সহ ৫ জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আবেদন করেছিল এনআইএ৷ ২০০৯ সালে রাজধানী এক্সপ্রেস অপহরণ এবং ২০০৭  সিপিআইএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা৷ গতবছর ২২ অক্টোবর এনআইয়ের বিশেষ আদালত নির্দেশ দেন, যেহেতু ঝাড়গ্রাম নিম্ন আদালত ছত্রধরের জামিন মঞ্জুর করেছিল, তাই ছত্রধর মাহাতো এবং ৫ অভিযুক্তের জামিন খারিজের জন্য NIAকে সেখানেই আবেদন করতে হবে৷ হাইকোর্টের বেশ কয়েকটি এজলাস ঘুরে বর্তমানে মামলার শুনানি শুরু হয় প্রধান বিচারপতি টি ভি রাধাকৃষ্ণান ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে৷

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে ছত্রধর মাহাতোর আইনজীবী দেবাশীষ রায় আদালতে মামলার যৌক্তিকথা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জানান, ২০০৭ সালে সিপিআইএম নেতা  প্রবীর মাহাতো খুন হন৷ তাদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে (৩০২/১২৩) ধারায় খুন এবং দেশদ্রোহী মামলা দায়ের করা হয়৷ যার সর্বোচ্চ সাজা আমৃত্যু কারাবাস৷ ১৩ বছর বাদে ছত্রধর মাহাতো সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ( UAPA) ধারা যোগ করার কারণ কী? যদিও NIA পক্ষের আইনজীবী হাইকোর্টে দাবি করেন, তাঁদের আইন অনুযায়ী এনআইএ মামলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হতে পারে না। মূলত এনআইএর বিশেষ আদালত এবং হাইকোর্ট দেখবে৷  হাইকোর্ট অবিলম্বে ছত্রধর মাহাতো জামিন খারিজ করা হোক বলে দাবি জানানো হয়৷ কিন্তু, সেই আর্জি আপাতত টেকেনি৷

২০০৯ সালের কাঁটাপাহাড়ি বিস্ফোরণ মামলায় গত বছর ১৯ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ছত্রধরের যাবজ্জীবনের সাজা কমিয়ে ১০ বছর হয়েছিল৷ দীর্ঘ আইনি জট কাটিয়ে প্রায় এক দশক পর গতবছর ফেব্রুয়ারিতে জেল থেকে মুক্তি পান জঙ্গলমহলের অবিসংবাদী নেতা ছত্রধর৷ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ছত্রধরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছিল তৃণমূল৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল৷ তখন শুরু হয়েছিল জল্পনা৷ এরপর সরাসরি তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে চলে নাম তুলে নেন অবিসংবাদী নেতা ছত্রধর৷  গত ২০১৫ সালে ইউএপিএ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো৷ মেদিনীপুর আদালতের তরফে ছত্রধর, সুখশান্তি বাস্কে, শম্ভু সরেন ও সাগেন মুর্মুকে দোষী সাব্যস্ত করার পর প্রিজন ভ্যানে দাঁড়িয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ছত্রধর৷ পরিবর্তনের আমলে জঙ্গলমহলের আন্দোলন পর্বে ছত্রধরের পাশে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ একই মঞ্চে দু’জন করেছিলেন একাধিক সভা৷ মমতা তখন বিরোধী নেত্রী৷ সে কথা মনে করিয়ে আদালত চত্বরে ছত্রধর জানিয়েছিলেন, তৃণমূল এখন ক্ষমতায়৷ আমাদের আন্দোলনকে স্বীকৃতিও দিয়েছিল তৃণমূল৷ অথচ, সেই আন্দোলনের জন্যই আমাদের দোষী সাব্যস্ত করা করা হয়েছে৷ তৃণমূলকে নিয়ে আন্দোলন করার পর সেই ‘বন্ধু’ ছত্রধরের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে রাষ্ট্রদোহী মামলা দেওয়া ও পরে গ্রেপ্তারির ঘটনায় বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ তুল পারেন জনগণের কমিটির নেতা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *