ছাতনা: ভোট গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকদের সবথেকে বড় গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এই অধিকার প্রয়োগ করে আদেও কতটা লাভ পান সাধারণ মানুষ? কলকাতা কিংবা দিল্লির মসনদে যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতার চেয়ারে বসুক না কেন, গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের জীবনের ছবিটা কিন্তু আদতে একই থেকে যায়। আর এই চরম সত্যিটাই এবার উপলব্ধি করেছে বাঁকুড়ার এক ছোট্ট গ্রাম। ছাতনা।
গ্রামের জামখোল নদীর উপর ভগ্নপ্রায় এক সেতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা, নদী পাড়া পাড়ে ওই এক চিলতে সেতুই ভরসা গ্রামবাসীর। কিন্তু অভিযোগ দীর্ঘ দিন সেতু সারাই করা হয় না। কোনো রাজনৈতিক দলই এই কাজের উদ্যোগ নিতে এগিয়ে আসেনি। বর্ষাকালে জল বাড়তে শুরু করলে অত্যন্ত কষ্টে যাতায়াত করতে হয়। যাতায়াতের অবস্থা থাকে না। এমনকি কোমরে দড়ি বেঁধেও যাতায়াত করতে হয় মহিলাদের। অবস্থার দীর্ঘদিন ধরেই অপরিবর্তনীয়। আর তাই এবার এক চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাঁকুড়ার ছাতনা গ্রামের বাসিন্দারা। নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকারকেই বয়কট করার কথা বলেছেন তাঁরা।
সেতু সারাই না করলে কোনো দলকেই কোনো ভোট দেবেন না ছাতনাবাসী, এদিন এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা। রাজ্য জুড়ে প্রথম দফার নির্বাচনকে ঘিরে যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি, যখন ভোট দেওয়া, দিতে না পারা, ইভিএম কারচুপির অভিযোগে সরগরম রাজ্য রাজনীতি তখন ছাতনা গ্রামের অধিবাসীরা এই সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি তৈরি করেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্তে রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে রাজনীতি। সেতুর সমস্যা যতক্ষণ না মিটছে ততক্ষণ ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা ভোট বয়কট করেছেন। জানা গেছে প্রায় ৭০ বছর আগে কংগ্রেসের আমলে এই সেতু নির্মাণ করেছিলেন শিবদাস চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকেই অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ছাতনা গ্রামের সেতু।