কালিয়াগঞ্জ: হাতে আর সময় নেই বল্লেই চলে! শ্যামা পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই আগামী বুধবার মেতে উঠবে হিন্দি ভাষি মানুষেরা ছট পুজায়। তাই একটু বেশি লাভের আশায় ডালি ও কুলা বানাতে ব্যস্ত বৈশ্য পাড়ার শিল্পীরা। ফলে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈশ্য পাড়ায় নাওয়া খাওয়া ভুলে সবাই বাঁশ দিয়ে তৈরি করা ডালি ও কুলা বানাতে ব্যস্ত।
বাঙালির প্রধান উৎসব দুর্গা পুজো ও শ্যামা পুজোর মতো হিন্দী ভাষি সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রধান উৎসব হল ছট পূজা। বর্তমানে এই ব্রত হিন্দি ভাষি সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ আর নেই। এখন আপাময় বাঙালি সহ মাড়োয়ারি, নেপালি সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিজেদের পরিবারের মঙ্গল কামানায় এই পুজোয় ব্রতী হন। ভাগবত পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারতের মতো বিভিন্ন গ্রন্থে সূর্যের উপাসনায় উল্লেখ পাওয়া যায়। আর বিভভ মতে ছট হল ষষ্টির অপভ্রংশ।
কার্তিক মাসের আমাবস্যার পরে ষষ্টিতে ছট পুজোর ব্রত পালন করা হয়। আরেক মতে, সুর্য আর ষষ্টি হল ভাই বোন। সেই কারণেই ছটকে ছট্টি মাইয়া বলা হয়। এই পুজো করা হয় বিকালের ঘাটে যাওয়া সূর্য ও পরের দিন উদিও মান সূর্যকে। এই ছট পূজার প্রধান উপকরনের মধ্যে অন্যতম হল প্রধান বাঁশের তৈরি উপাচার সাজানোর কুলা ও ডালা। আর সেই কারণেই কালিয়গঞ্জে বৈশ্য পাড়ার শিল্পীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো।
বড় থেকে ছোট মহিলা পুরুষ সকলে মিলে কুলো ও ডালি বানাতে ব্যস্ত। সারা বছর বিভিন্ন ধরণের কাজ করলেও একটু বেশি উপার্জনের আশায় বছরের কয়েকটি দিন কুলা ও ডালা তৈরি করেন গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারের লোকেরা। শুধু কালিয়াগঞ্জের হাটে বাজারেই সীমাবদ্ধ নয়৷ বৈশ্য পাড়ার শিল্পীদের হাতের তৈরি কুলা ও ডালা পাড়ি দিচ্ছে পাশের রাজ্য বিহার ছাড়া পাশের জেলাগুলিতেও।
তাঁদের হাতের তৈরি সামগ্রী খোলা বাজারে কুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও ডালা ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিছু ক্ষেত্রে পাইকারেরা নিয়ে যায়। বাড়ির ছোটরাও এই সময় পড়ার পাঠ তুলে বড়দের সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়ে দেয়৷ যদি সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা আসে!