কলকাতা: করোনা আবহে কীভাবে হবে ছট পুজো? কীভাবে পালন হবে করোনা বিধি? দুর্গোর মতো এবার ছটোয় জারি থাকবে ‘নো-এন্ট্রি’র নির্দেশ? উৎসবে সংক্রমণ রুখতে আরও একবার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট৷
ছট পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণ মামলায় রায় ঘোষণা হাইকোর্টের তরফে সাফ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বুধবার থেকে রাজ্যকে মাইকিং করতে হবে৷ যেসব জায়গায় ছট পুজোর জন্য যারা আসবেন, সেখানে পরিবারের এক থেকে দুই ছাড়া নদীতে প্রবেশ করতে পারবে না৷ হবে কোনও শোভাযাত্রা৷ যদি কোনও রাস্তা শুধু শোভাযাত্রার জন্য করে দেওয়া যায়, তবে গান কিংবা ঢাক ইত্যাদি অনুমতি দেওয়া হবে না৷ যারা গাড়ি নিয়ে আসবেন, তাঁরা কোভিড নিয়ম মানবেন৷ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ মাস্ক পরতে হবে৷ পুজোর পর জলে কিছু ফেলা যাবে না৷ রবীন্দ্র সরোবর, সুভাষ সরোবরে ছট পুজো করা যাবে না৷ পরিবেশ আদালতের এই রায়কে মানতেই হবে রাজ্যকে৷ কলকাতা পুরসভার কর্মীরা এই প্রচার করবেন, ছট পুজো নজরদারি করবে৷ সারা রাজ্যেই মানতে হবে এই নিয়ম৷ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ৷
ছট পুজোয় ভিড় নিয়ন্ত্রণ মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, কলকাতা ছাড়া শিলিগুড়ি, দুর্গাপুরেও ছট পুজো হয়ে থাকে৷ সেখানে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? ছট উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রায় ভয়ংকর ভাবে ডিজে পোড়ানো হয়৷ মাইক বাজানো হয়৷ এগুলির ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে? রাজ্যের কাছে জানতে চান বিচারপতি৷ রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, ছট পুজোয় সবাই মাস্ক পরবে৷ পাল্টা বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এতেই কি সব হয়ে যাবে? কী ধরনের প্রচার চালিয়েছে রাজ্য?
বিচারপতির এই পর্যবেক্ষণে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, কেউ যদি বেড়িয়ে যায়, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন৷ যদিও গতবছর পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ভেঙে রবিন্দ্র সরোবরে হয়েছিল ছট পুজো৷ জনতার চাপে কার্যত গাঘাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা৷ এবারও সেই আশঙ্কার কথাই কার্যত বোঝানোর চেষ্টা করা হয়৷ রাজ্যের অবস্থানের পর বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, তারমানে আপনাদের কোনও পরিকল্পনা নেই? জীবন যেখানে স্বাভাবিক নয়, সেখানে রাজ্য কি পরিকল্পনা করছে? শহরে অনেক পকেট আছে৷ যেমন জুট বেল্ট৷ যেটা নদীর পাশেই৷ আপনাকে সেগুলি দেখে কিছু সিদ্ধান্ত নিতেই হবে৷ সংখ্যা নির্দিষ্ট করতে হবে৷ প্রচার চালিয়ে বলতে হবে, অতিমারিতে এটা চালানো যাবে না৷ ম্যানেজ করতে পারবেন না, যদি নির্দিষ্ট সংখ্যা না বলতে পারেন৷
মামলার শুনানিতে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও পর্যবেক্ষণ, সংবাদপত্র রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, বাজি পাওয়া যাচ্ছে৷ বিশেষত নুঙ্গি, চাম্পাহাটি, বড়বাজারে? কীভাবে এটা সম্ভব? আমরা বড়জোর বলতে পারি, বাজি ব্যবহার করা যাবে না৷ রাজ্যের দায়িত্ব এটা পালন করা৷ একটা টিম কলকাতা পুলিশ বা জেলা টিম দিয়ে নজরদারি চালানো উচিৎ৷ আদালতের প্রশ্নের পর রাজ্যের তরফে বাড়তি কয়েক ঘণ্টা সময় চেয়ে নেওয়া হয়৷ পরে বিকেলে ছট পুজো নিয়ে রায় ঘোষণা করে আদালত৷