‘জয় শ্রী রাম শুনতে অ্যালার্জি কেন?’ সমালোচনায় নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসু

‘জয় শ্রী রাম শুনতে অ্যালার্জি কেন?’ সমালোচনায় নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসু

কলকাতা: নেতাজির ১২৫ তয় জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে রাজনৈতিক তরজার সাক্ষী থাকল পশ্চিমবঙ্গ, তা সাম্প্রতিক সময়ের প্রেক্ষিতে নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।  কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল তথা বিভিন্ন সরকারি আমলা মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে গতকাল পালিত হয় নেতাজি জয়ন্তী। কিন্তু বাংলার প্রাক-নির্বাচনী রাজনৈতিক উত্তাপের আঁচ থেকে রেহাই পায়নি এই জাতীয় উৎসবও।

গতকালের ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপমানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রীকে মঞ্চে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলে একদল গেরুয়া সমর্থক ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে ওঠেন। ফলে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য না রেখেই ভাষণ-মঞ্চ ত্যাগ করেন। নীতিগত বিরোধ সত্ত্বেও এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বাম-কংগ্রেস নেতারা। এমনকি বিজেপির অভ্যন্তরেও সমর্থকদের এহেন আচরণ নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়। কিন্তু নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসুর মতে সমর্থকরা কোনো অন্যায় করেননি।

এদিন ভিক্টোরিয়া চত্বরে মুখ্যমন্ত্রীর অপমান বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রপৌত্র তথা বিজেপি নেতা চন্দ্র বসু সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘জয় হিন্দ’ বা ‘জয় শ্রী রাম’-এর মধ্যে কোনো তফাৎ দেখছেন না তিনি। তাঁর কথায়, “নেতাজি একতার প্রতীক। তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজে ছিলেন সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ। কেউ জয় হিন্দ বলুক বা জয় শ্রীরাম, আমি কোনও পার্থক্য খুঁজে পাই না।”

চন্দ্র বসুর মন্তব্যকে অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গতকালের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তিনি বলেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান উঠছে। নেতাজির জন্মদিনেই বোঝা গেল কারা বাংলার মনীষীদের সম্মান ভুলুণ্ঠিত করছে। এভাবে স্লোগান তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে।” এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে উঠে জানান, “সরকারি অনুষ্ঠানের একটা ভদ্রতা থাকে বলেই জানতাম। আমি কোনো বক্তব্য রাখব না।” মুখ্যমন্ত্রীর আচরণে বিজেপি নেতা চন্দ্র বসুর কটাক্ষ, “জয় শ্রীরাম কোনও স্লোগান নয় যে তা শুনে অ্যালার্জির মতো আচরণ করতে হবে।” নেতাজির জন্মদিনে মুখ্যমন্ত্রীর এমন আচরণ করা উচিত ছিল না বলেই মত দিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *