ভাষার গেরোয় অভাবের সংসারে ‘অতিথি’ নিরাপত্তারক্ষী, ফাঁপড়ে BJP বিধায়ক

ভাষার গেরোয় অভাবের সংসারে ‘অতিথি’ নিরাপত্তারক্ষী, ফাঁপড়ে BJP বিধায়ক

শালতোড়া:  মাথার উপর টালির চাল৷ প্রথর রৌদ্রে সেই চালের উপর খেলা করে রোদের ছটা৷ আবার বর্ষায় সেই চালেই  ঝরে পড়ে বৃষ্টির ফোঁটা৷ আর এই একচালা টালির বাড়িতেই থাকেন বিধায়ক৷ ওই বিধায়কের বাড়িতে দেহরক্ষার কাজে এসে হতবাক হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও৷ যা ছিল চেনা ছবির থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ তাঁর এই করুণ অবস্থা দেখে নিরাপত্তা রক্ষীরাই বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত৷ তিনি অন্য কেউ নন, শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি৷ 

আরও পড়ুন- নিউ ব্যারাকপুরে গেঞ্জি কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, অকুস্থলে ১৫টি ইঞ্জিন, আনা হল রোবট

ভাষার সমস্যার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বোঝাতে অসমর্থ হন যে, এখন নয়, এক মাস পর কেন্দ্রীয় জওয়ানদের দেহরক্ষী হিসাবে পেতে চান তিনি৷ পরে অবশ্য বলেন দেহরক্ষা নেবেন না৷ কারণ একচালা বাড়িতে নিজেদেরই ভালোভাবে থাকার জায়গা হয় না৷ সেখানে অতিথিদের থাকতে দেওয়ার জায়গা কোথায়? কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা এসে পড়লে অগত্যা এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করেন চন্দনা৷ থাকা তো হল৷ কিন্তু তাঁদের খাবার ব্যবস্থা করবেন কী ভাবে? করোনা পরিস্থিতিতে স্বামীর কাজও বন্ধ৷ তিনি পেশায় দিনমজুর৷ নিজেদের যেটুকু জোটে তাই দিয়েই কোনও ভাবে চলে যায়৷ কিন্তু অতিথিদের এই খাবার দেবেন কী ভাবে? সেই চিন্তা গ্রাস করেছিল চন্দনাকে৷ সকালের খাবার জোটে মুড়ি আলু ভাজা৷ দুপুরের আয়জনও বিশেষ কিছু নয়৷ বিধায়কের এই অবস্থা দেখে জওয়ানরাই এগিয়ে আসে৷ নিজেদের খরচায় বাজার থেকে সবজি কিনে আনেন তাঁরা৷ 

এই অবস্থায় খুবই কষ্টের মধ্যে পড়েছেন বিজেপি বিধায়ক৷ কিন্তু তিনি বারবার বলেছিলেন এখনই নিরাপত্তারক্ষী নিতে প্রস্তুত নন৷ চন্দনা বলেন, ‘‘আপনারা সকলেই জানেন আমি গরিব ঘরের বিধায়িকা৷ শালতোড়া বিধানসভার মানুষের আশীর্বাদে এখানে এসেছি৷ তবে এখনও আমার অবস্থার পরিবর্তন হয়নি৷ একটা অ্যাকাউন্টও খুলতে পারিনি৷ আর্থিক অবস্থা ভালো নয়৷ স্বামীও কাজে যাতে পারছেন না৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীর জন্য আবেদন করেছিলাম৷ কিন্তু বলেছিলাম একমাস পর৷ তবে ভাষার জন্য হয়তে তাঁরা বুঝতে পারেনি৷ তার পরের দিনই কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে দিয়েছে৷ খুবই সমস্যায় পড়েছিলাম৷ তার পর গ্রামেরই একটি বাড়িতে ওঁনাদের থাকার ব্যবস্থা করি৷ এবং তাঁরা নিজেরাই কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের ব্যবস্থা করেছেন৷ এমনকী আমাদেরও সাহায্য খাবার জিনিস দিয়ে সাহায্য করছেন৷’’      
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen + seven =