কলকাতা: আমপানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলার একাধিক স্কুল। ভেঙে পড়েছে দেওয়াল কিংবা ছাদ। একাধিক স্কুলে পুনর্গঠনের কাজে রাজ্যকে নাকানি-চোবানি খেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় সর্ব শিক্ষা খাতে কেন্দ্রীয় অনুদান না পাওয়া রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর পরেছে বিপাকে।
চলতি বছরের জুলাইয়ের রাজ্যের সর্ব শিক্ষা খাতে কেন্দ্রীয় অনুদান কমে গিয়েছে অনেকটাই। বুনিয়াদি স্তরের এই অনুদানে পশ্চিমবঙ্গকে পিছনে রেখে এগিয়ে গিয়েছে বিহারের মতো রাজ্যও। তাদের কেন্দ্রীয় অনুদান বাংলার অনুদানের চেয়ে দিগুণেরও বেশি। এদিকে আমপান ঘূর্ণিঝড়ে বাংলার একাধিক স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সারাইয়ের কাজের পাশাপাশি পুনর্গঠনের কাজে রাজ্যের অর্থভাণ্ডার নিঃস্ব হতে চলেছে। বিহার বা মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলির কেন্দ্রীয় অনুদান বাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলায় সেই অনুদানের ঘাটতি করায় কেন্দ্রকে তুলোধোনা করেছে বিকাশ ভবন।
প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়াশোনাকেই বুনিয়াদি স্তরে ফেলা হয়। এই খাতে পশ্চিমবঙ্গ জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় অনুদান স্বরূপ পেয়েছে ২৭৫ কোটি টাকা৷ যেখানে বিহার ও মধ্যপ্রদেশ পেয়েছে যথাক্রমে ৫৫৬ ও ৫৫০ কোটি টাকা। স্কুলশিক্ষার প্রোজেক্ট অ্যাপ্রুভাল বোর্ড বা প্যাব দ্বারা নির্ধারিত হয় কোন রাজ্য কত টাকা অনুদান পাবে। সেক্ষেত্রে এখনও পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের প্রাপ্য অনুদানের তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। এই ২৭৫ কোটি টাকা অ্যাড হক ভিত্তিতেই পেয়েছে রাজ্য। রেকারিং গ্রান্ট অনুযায়ী ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়ে কেন্দ্র ঠিক করেছে প্রতি মাসে মোট অনুদানের ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশ এবং প্রতি ত্রৈমাসিক ক্ষেত্রে তা ২৫ শতাংশ হবে। সেই হিসাবে প্রতি রাজ্য পাবে ৮,৯০৩ কোটি টাকা। সেখানে বাংলার মোট অনুদান ৩৫৩ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরও ৭৮ কোটি টাকা পাবে। সেক্ষেত্রে রাজ্যের কোষাগারে টান পরেছে।
আমপান পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের মোট খরচের পরিমাণ বেড়েছে অনেকটাই। এখনও কেন্দ্র থেকে ১,০০০ কোটি টাকা পাওনা আছে রাজ্যের। যদিও কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে গত বছরের অব্যবহৃত ৬,২০০ কোটি টাকা ফেরত নেওয়া হবে না। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সেই ক্ষেত্রে রাজ্য খাতে ইতিমধ্যেই ৫২৩ কোটি আছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র স্কুল শিক্ষা দফতর। তারা আরও জানিয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পের ইউসি অর্থাৎ ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট পাঠাতে দেরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ। যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ বিকাশ ভবন। তাদের দাবি তারা ইউসি যেমন ঠিক সময়ে পাঠিয়েছে তেমনই মিড ডে মিলের উপকরণ নিয়মিত দেওয়ায় সেই টাকা জমে থাকার কথা নয়।