লাগবে না কেন্দ্রের দয়ার দান! আগে ছিল নোটবন্দি, এখন মানুষ ঘরবন্দি: মমতা

লাগবে না কেন্দ্রের দয়ার দান! আগে ছিল নোটবন্দি, এখন মানুষ ঘরবন্দি: মমতা

2d089b81ac15234b96ae979461026799

কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় এ রাজ্যে কেন্দ্রের অবদান নিয়ে সোমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আগে ছিল নোট বন্দি, এখন মানুষ হয়েছে ঘরবন্দি৷ মানুষ খুব কষ্টের মধ্যে আছে৷ কতদিন এমন থাকতে হবে জানি না৷ আমাদের কোনও রকম আর্থিক সাহায্য করেনি কেন্দ্র৷ নবান্নে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর৷

দিল্লির কাছ থেকে এ রাজ্যের মানুষ কি পেয়েছে, এদিন বৈঠকে সেই খতিয়ানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, আমাদের কোনওরকম টাকা দিয়ে সাহায্য করেনি কেন্দ্র৷  রাজ্যের এই বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যেই ১১ লক্ষ পিপিই বরাত দেওয়া হয়েছে৷ যার মধ্যে ২ লক্ষ ৭ হাজার ১০০টি পিপিই সরকারের হাতে এসেছে৷ এগুলি ধীরে ধীরে চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রের কাছে ৫ লক্ষ পিপিই চেয়েছিলাম৷ গতকাল আমাদের দয়া করে তিন হাজার পিপিই পাঠানো হয়েছে৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশে প্রথম করোনা ধরা পড়ে ২১ জানুয়ারি৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ২৪ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ আর আজ এপ্রিলের ৬ তারিখ হয়ে গেল৷ অথচ আমরা সেই অর্থে কোনও কিছুই পাইনি৷ আর অদ্ভূতভাবে যে ৩ হাজার পিপিই পাঠানো হয়েছে সেগুলি রং করা হয়েছে হলুদ৷ কিসের সঙ্গে মিলেয়ে পিপিই-র রং হলুদ করা হয়েছে, তা আমার জানা নেই৷ কোভিড-১৯ এর সঙ্গে এর কোনও মিল আছে কি? পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘এতদিন জানতাম চিকিৎসকরা সাদা পোশাক পরেন৷ অনেক সময় তাঁরা গোলাপী, বা আকাশী রংয়ের পোশাকও পরেন৷ কিন্তু কোনও দিনও তাঁদের হলুদ পরতে দেখিনি৷’’

এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আমেরিকা যে পিপিই ব্যবহার করে রাজ্যের হাতেও সেই পিপিই ২০ থেকে ৩০ হাজার মজুত আছে৷ তবে এখনই সেগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে না৷ খুব জরুরি পরিস্থিতি হলে সেগুলি ব্যবহারের কথা ভাবা হবে৷ তিনি আরও জানান, পিপিই ছাড়াও কেন্দ্রের কাছে ৫ লক্ষ এন ৯৫ মাস্ক চাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তিন মাসের মধ্যে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে মাত্র ১০ হাজার৷ এতে কী হবে? কেন্দ্রের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানান, কোনও আর্থিক সাহায্য ছাড়াই রাজ্য সরকার ৭ লক্ষ ৯২ হাজার মাস্ক অর্ডার দিয়েছে৷ এর মধ্যে ৭৮,৭৫০টি মাস্ক পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা৷

করোনা সংক্রমণ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৪ দিনের লকডাউনের পর এই সংক্রমণ আর হবে না, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই৷ তবে একটাই সুখবর, ওষুধে সাড়া দিচ্ছে বহু রোগী৷ অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরছেন৷ তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গই নয় করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে সবকটি রাজ্য৷ মুম্বইয়ের ওখার্ড হাসপাতালের ২৬ জন নার্স ও তিনজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ একই ভাবে লড়ছে তামিলনাড়ু, কেরল৷

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই অবস্থায় গত শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে চা বাগান খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ কিন্তু এই মুহূর্তে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে পাহাড়ের মানুষ৷ কালিম্পং থেকে একই পরিবারের ১১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ এছাড়াও রয়েছে অসম, নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশ বর্ডার৷ তাই কেন্দ্রের নির্দেশ সত্ত্বেও আরও একবার এই বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *