শীতলকুচি: শনিবার চতুর্থ দফার নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচিতে কী ঘটনা ঘটেছে তা কারও অজানা নয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জন ভোটারের। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে কারণ বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস একে অপরের দিকে আঙুল তুলছে। বিজেপির দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানির জন্য এই ঘটনা ঘটেছে কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরা এবং তাদের বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস বলছে পুরোটাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরিকল্পনা এবং ইচ্ছা করে খুনের রাজনীতি করছে তারা। এদিকে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর খবর অনুসারে, সেখানের এক ১৪ বছরের বালককে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান বেধড়ক মারধর করে, তারপরেই মূলত ঘটনাক্রম গড়ায় গুলি চালানোয়।
জানা গিয়েছে, ১৪ বছরের ওই বালক যার নাম মৃণাল হক, সে ভোটের দিন বাজারে গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এসে তার ঘাড় ধরে তাকে বেধড়ক মারতে শুরু করে! সে নিজেও বুঝতে পারছিল না তাকে কেন ওইভাবে মারছে সে। বেশ কিছুক্ষণ তাকে ঐ ভাবে মারা হয় বলে জানিয়েছে সে। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই আচরণের বিরোধিতা করতে ছুটে আসেন একের পর এক গ্রামবাসী পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই বুথের বাইরে গুলি চলে এবং ৪ জন ভোটারের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জন্য মৃণালের বাবা-মা কেউ ভোট দিতে পারেননি কারণ মৃণালের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তার বাবা-মা এই ঘটনায় অবাক হয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছেন, তাদের ছেলের ভোট দেওয়ার মতো বয়স হয়নি এবং সে বুথের আশেপাশেও ছিল না। বুথ থেকে কমপক্ষে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে ছিল সে। তা সত্বেও তাকে কেন এইভাবে মারধোর করা হল তারা বুঝতে পারছেন না।
যদিও এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ক্লিনচিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিনি দাবী করছেন, এই ঘটনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরিকল্পনামাফিক ঘটানো হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন তথ্য লুকোতে আগামী তিন দিনের জন্য সেখানে যাওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। একই সঙ্গে তাঁর আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির নির্দেশের কাজ করছে এবং সাধারণ ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। যদিও বিজেপি প্রথম থেকে দাবি করে আসছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার যে মন্তব্য করেছিলেন সেকার উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই শীতলকুচি প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে রাহুল সিনহা সহ সায়ন্তন বসুরা একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করতে শুরু করে দিয়েছেন। দিলীপ বলছেন, বাড়াবাড়ি করলে আরো শীতলকুচি হবে, অন্যদিকে রাহুল বলছেন ৪ জন নয়, ৮ জনকে মারা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর।