বগটুই-কাণ্ডের তদন্তে নেমে গরু, বালি এবং পাথর পাচার চক্রের খোঁজ, কী বলছে সিবিআই?

বগটুই-কাণ্ডের তদন্তে নেমে গরু, বালি এবং পাথর পাচার চক্রের খোঁজ, কী বলছে সিবিআই?

কলকাতা: বগটুই কাণ্ডে কেঁচো খুড়তে কেউটে৷ ভস্মস্তূপ খুঁড়ে গরু পাচারের যোগ রয়েছে বলে মনে করছে সিবিআই৷ তদন্তে মিলেছে বেআইনি বালি আর পাথর খাদানের তথ্য। 

আরও পড়ুন- জোট প্রস্তুতি? সমস্ত বিরোধীদের বৈঠকে বসার আহ্বান মমতার

তদন্তকারীদের দাবি,  বীরভূমে রামপুরহাটের এই এলাকায় রমরমিয়ে চলত গরু, বালি ও পাথর পাচারের কারবার৷ আর এই চক্রের মূল পাণ্ডা ছিলেন তৃণমূলের নিহত উপপ্রধান ভাদু শেখ৷ সিবিআই মনে করছে, এই পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে আশপাশের ১৫-১৬টি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। সম্ভবত পাচার চক্রের লভ্যাংশ নিয়েই বিবাদ ছিল সোনা‌ শেখ আর ভাদু শেখের মধ্যে৷ 

প্রথমিক তদন্তের পর সিবিআই মনে করছে, ভাদু খুন হওয়ার পর তাঁর শাগরেদরা কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়ে৷ এক দিকে ছিল বছরে কোটি কোটি টাকার কালো ব্যবসা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা৷ অন্য দিকে ছিল ভাদু খুনের বদলা। এই দুটি কারণের মিলিত ফল ছিল বেপরোয়া হামলা, অগ্নিসংযোগ। তদন্তকারী অফিসাররা জানাচ্ছেন, গরু, বালি, পাথর পাচার থেকে আসা বেআইনি টাকা পৌঁছত জেলার সর্বস্তরের প্রভাবশালীদের ঘরে৷ এক সিবিআই-কর্তা বলেন,  “গত কয়েক বছরে পাচার চক্র থেকে কী পরিমাণ মুনাফা তারা লুটেছে, তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ ভাদু শেখ ও ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের বসত বাড়ি৷ বছর ছয়েক আগে একজন ছিলেন দিনমজুর আর অন্য জন কাজ করতেন মুরগির মাংসের দোকানে৷” 

বগটুই-কাণ্ডের পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে৷ তাঁকে জেরা করে গত‌ ৫-৬ বছরে পাচার চক্রের লভ্যাংশের আঁচ মিলেছে৷ এই চক্র থেকে আসা কোটি কোটি কাঁচা টাকা কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে পৌঁছেছে, সেই বিষয়েও আন্দাজ করা গিয়েছে বলে দাবি সিবিআই-এর। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘জেলা পুলিশের একাংশ ও প্রভাবশালীদের মদতে বীরভূমের লাল মাটিতে যে গরু পাচার চক্রের জাল বিস্তৃত হয়েছিল, তা আগেই তদন্তে উঠে এসেছে। সেই জন্যেইই বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে চার দফায় তলবি নোটিস পাঠানো হয়েছে।’’