কলকাতা: নারদা মামলায় যেদিন রাজ্যের ৪ নেতা এবং মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয় সেদিন নিজাম প্যালেসের বাইরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী এবং সমর্থকরা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যাওয়ার পর থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এমনই দাবি করছে সিবিআই। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল যে অভিযুক্তদের জন্য ধর্নায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী! গ্রেফতারির দিন যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেটি পরিকল্পিত ছিল বলে দাবি করেছে তারা। যদিও এর পাল্টা দিয়েছে সরকার পক্ষের আইনজীবী।
কলকাতা হাইকোর্টে চলছে নারদা মামলার শুনানি। সিবিআইয়ের এই বক্তব্যের পাল্টা দিয়ে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি দাবি করেছেন, প্রতিবাদকে ছুঁতো হিসেবে ব্যবহার করছে সিবিআই। সেদিন তাদেরকে কোনভাবে বাধা দেওয়া হয়নি শুধু ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করতে চাইছে তারা। অভিষেক বললেন, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অশান্তি হয়নি। বরং তিনি এবং অন্য বিধায়কেরা অশান্তির বিরোধিতা করেছেন। একইসঙ্গে প্ররোচনা দেওয়ার কোনও উদাহরণ নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। যদিও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলছেন, বিচারপতি যাতে জামিন নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিতে পারেন তাই জন্য পরিকল্পনা মাফিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল সেদিন। দল বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী আরও লোকজন নিয়ে সিবিআই দফতরে ঢুকে যান। তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি জানান। যা হয়েছে সেটা নজিরবিহীন ঘটনা! এর আগে শেষে এই ধরণের ঘটনা হয়নি বলে দাবি তাঁর। তিনি আরও বলেন, অফিস ঘেরাও করা হচ্ছিল এবং জনতা সিবিআই দপ্তরে ঢোকার চেষ্টা করছিল। এমনকি অফিসের উদ্দেশ্যে পাথর ছোড়া হচ্ছিল এবং ভাঙচুর চালানোর পরিকল্পনা করা হয়। অভিযুক্তদের যাতে আদালতে পেশ না করা যায় সেই জন্য সব রকমের চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার নিজাম প্যালেসের বাইরে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে এই মামলা অন্যত্র সরানো হোক বলে আর্জি জানিয়েছেন সিবিআই৷ অন্যদিকে, চার নেতার জামিনের রায়ে স্থগিতাদেশের বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করা হবে আজ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা জানাচ্ছেন, তদন্তের স্বার্থেই চার্জশিট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তাঁদের গ্রেফতার করার প্রয়োজন ছিল৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই সিবিআই তদন্ত করেছে। তাহলে তদন্তে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? প্রশ্ন তুষার মেহেতার। এদিকে সিবিআই দাবি করছে, তদন্তের জন্য এই নেতাদের যখন ডাকা হয়েছিল তখন তাঁরা সাহায্য করেননি৷ একবার নয় একধিকবার তাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।