CBI কি এবার বাথরুমে ঢুকবে? ক্ষুব্ধ মমতা! সিআইডি করলে সব ঠিক, আর সিবিআইয়ে যত সমস্যা?

CBI কি এবার বাথরুমে ঢুকবে? ক্ষুব্ধ মমতা! সিআইডি করলে সব ঠিক, আর সিবিআইয়ে যত সমস্যা?

cm-announces-salary-hike-for-bengal-anganwadi-workers

নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সাড়ে তিন দশকের রাজত্বে বিভিন্ন ঘটনায় নিয়মিত সিবিআই তদন্তের দাবি করতেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কতগুলি ঘটনার তদন্তে তিনি যে সিবিআই চেয়েছিলেন তা হিসেব করতে গেলে ক্যালকুলেটর লাগবে। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের পর থেকেই বিষয়টি বদলাতে শুরু করেছে। এখন সিবিআই তদন্ত হলেই তার তীব্র বিরোধিতা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত হলেও সেটি আটকাতে ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্টে দৌড়চ্ছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে সিবিআইকে ফের তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় বুধবার সকাল থেকেই ম্যারাথন তল্লাশিতে নামে সিবিআই। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধ মমতার প্রশ্ন,”এবার কি সিবিআই বাথরুমে ঢুকবে?” সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সিবিআই তদন্তের নামে ট্রেন দুর্ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্তদের (ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের) আর্থিক সহায়তা দিতে এসে এমনটাই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

তিনি বলেন, ‘‘আজ   আমি কিছুই বলতাম না। কিন্তু আমাকে বলতেই হচ্ছে। ভেবেছিলাম বলব না, কিন্তু এত বড় দুর্ঘটনা! আমায় পরিস্থিতি বাধ্য করেছে। কী করে ধামাচাপা দেওয়া যায় সেই চেষ্টা চলছে। যে সব পরিবার সব কিছু হারিয়েছে, তারা জবাব চাইবে এদের কাছে। সত্য তথ্য বেরিয়ে আসুক। দুর্ঘটনার তদন্ত হল না। সকাল থেকে সিবিআইকে পাঠিয়ে দিয়েছে দিল্লি। রাজ্যের ১৪ থেকে ১৬টি পুরসভায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। নগরোন্নয়নেও (পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর) ঢুকিয়ে দিয়েছে। এবার কি বাথরুমেও ঢুকবে সিবিআই? ওয়াশরুমে ঢুকবে? ওইটুকুই বাকি আছে। এসব করে সত্য ধামাচাপা দেওয়া যায় না। প্রত্যেকটা আত্মার আত্মীয় কাঁদছে। আপনজন কোনও দিনও ফিরে আসবেন না। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থা হোক। তদন্ত হোক। মিথ্যে বলে আগুনকে চাপা দেওয়া যায় না৷”

মুখ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা নিয়ে যথারীতি উঠছে প্রশ্ন। গত কয়েক বছর ধরে সিবিআই এবং ইডি তদন্ত করলেই তৃণমূলের মুখ ভার হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের একটাই কথা, যদি কেউ অন্যায় বা দুর্নীতি না করে থাকেন, তাহলে যে কেউ তদন্ত করুক না কেন, তাতে তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

রাজ্য সরকার বারবার সিআইডি তদন্তের কথা বলছে। তাহলে কি সিআইডি তদন্ত করলে সবকিছু ঠিক আছে, আর সিবিআই করলেই যত সমস্যা? অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী নিজের পুলিশ তদন্ত করলে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, রাজ্য পুলিশ তদন্ত করলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে তো? শাসক দলের কেউ দুর্নীতি করলে তাঁর শাস্তি হবে তো? আজ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন সত্যটা বেরিয়ে আসুক। সেক্ষেত্রে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিরোধীরাও তো একই কথা বলবে, সত্যটা বেরিয়ে আসুক। কিন্তু ঘটনা হল কেউ কোথাও দুর্নীতি না করে থাকলে সিআইডি বা সিবিআই যেই তদন্ত করুক না কেন, কারও ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আর এটাই সবচেয়ে বড় সত্যি। তাই মুখ্যমন্ত্রী সিবিআইকে নিশানা করে যে সমস্ত কথা বলেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 11 =