নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে কয়লা পাচার বা গরু পাচার, বা হাল আমলের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পোস্টিং দেওয়া নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, সবকিছুরই তদন্ত করছে সিবিআই। কিন্তু তদন্তে সেভাবে গতি আসছে না বলে বহুদিন ধরেই অভিযোগ উঠেছে। ৯ বছর হয়ে গেল, সারদা মামলার এখনও নিষ্পত্তি করতে পারেনি সিবিআই। একই ভাবে নারদ মামলার তদন্তও অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে। ছয় বছর কেটে গেলেও সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। যে বিষয়গুলি নিয়ে জনমানসে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
একাধিকবার নিম্ন ও উচ্চ আদালত বিষয়টি নিয়ে সিবিআইয়ের প্রতি তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎই কলকাতায় এলেন সিবিআই ডিরেক্টর। শহরে এসে অফিসারদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন সিবিআইয়ের নয়া ডিরেক্টর প্রবীণ সুদ। বুধবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে সোজা নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে পৌঁছে যান তিনি। এরপর বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের যে সমস্ত অফিসার তদন্ত করছেন তাঁদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন আইসিসিআর অডিটোরিয়ামে। খোদ সিবিআই ডিরেক্টরের এই ভূমিকায় যথেষ্ট জল্পনা তৈরি হয়েছে।
ঘটনা হল বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় তদন্তের গতি এত ধীরে কেন চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কিছুদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা সিবিআইয়ের উদ্দেশে বলেন,” তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে? এভাবে চললে তদন্ত যখন শেষ হবে তখন কী তার আর কোনও প্রয়োজনীয়তা থাকবে?” এরপরই কলকাতায় এসে অফিসারদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন তিনি। এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সম্পর্ক সভা’। সূত্রের খবর, তদন্ত কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা নিয়ে তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেন ডিরেক্টর। জানা গিয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি গরু ও কয়লা পাচার-সহ অন্যান্য তদন্ত কোন পথে এগোবে এবং তার রুট ম্যাপ কী হবে, সেই বিষয়টি নিয়েও এদিন আলোচনা করেন প্রবীণ সুদ। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে কি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আরও কোনও বড় মাথা শীঘ্রই ধরা পড়বে?
সদ্য জানা গিয়েছে রাজ্যের অত্যন্ত প্রভাবশালী এক নেতা বিভিন্ন দুর্নীতির কালো টাকা তাঁর এক রাশিয়ান বান্ধবীর কাছে জমা রেখেছেন। সূত্রের খবর, ওই রুশ বান্ধবী বর্তমানে লন্ডনে থাকেন যিনি পেশায় মডেল। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ওই মডেলের অ্যাকাউন্টে অন্ততপক্ষে একশো কোটি টাকা গচ্ছিত রাখা হয়েছে। যা সবই দুর্নীতির টাকা বলে নিশ্চিত তদন্তকারী আধিকারিকরা। তাই শহরে সিবিআই ডিরেক্টর প্রবীণ সুদ আসার পর সকলের একটাই প্রশ্ন, এবার কি তবে বড় মাথারা ধরা পড়বেন? যে সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই তার কি এবার নিষ্পত্তি হবে? তাই আগামী দিনে এই মামলাগুলির তদন্তে আরও গতি আসে কিনা এখন সেটাই দেখার।