কলকাতা: প্রায় আড়াই ঘণ্টার জেরার পর শ্রীকান্ত মোহতাকে আটক করল CBI৷ কসবার শপিং মলের ১৮ তলায় ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের অফিস থেকে শ্রীকান্ত মোহতাকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ জেরায় অসঙ্গতি মেলায় তাঁকে আটক করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর৷ সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দপ্তরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বেশ কয়েক দফায় জেরা করা হবে বলে খবর৷ জেরায় সন্তুষ্ট না হলে তাঁকে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে খবর৷
বৃহস্পতিবার বাংলার জনপ্রিয় সিনেমা নির্মাতার সংস্থার ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের দপ্তরে হানা দেয় সিবিআইয়ের৷ এসবিএফ কর্তা প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে জেরার জন্য সিবিআই আধিকারিকরা হানা দেন কসবার একটি শপিং মলের ১৮ তলায় ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের অফিসে৷ অভিযোগ, শ্রীকান্ত মোহতাকে বাঁচাতে এদিন সিবিআই কর্তাদের বাধা দেয়ও হয়৷ পরে, বহু বিতর্কের পর শ্রীকান্ত মোহতার দপ্তরে ঢোকেন সিবিআই আধিকারিকরা৷ চলে দীর্ঘ জেরা৷ জেরায় অসঙ্গতি থাকায় তাঁকে আটক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
অভিযোগ, প্রথমে সিবিআই আধিকারিকদের ভেঙ্কটেশের অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়৷ বলা হয়, স্থানীয় থানার অনুমতি ছাড়া এ ভাবে তল্লাশি করা বা অফিসে এসে জেরা করা যায় না৷ গণ্ডগোলের খবর পেয়ে ওই শপিং মলে পৌঁছন কসবা থানার পুলিশ৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পুলিশও ফিরে যায়৷ ভেঙ্কটেশের ঝাঁ চকচকে দফতরে ঢুকে তদন্তের কাজ করছেন গোয়েন্দারা৷ সিবিআই সূত্রে খবর, রোজভ্যালি-কাণ্ডে জেরার জন্য টালিগঞ্জের এখনকার এই প্রযোজককে একাধিকবার জেরার জন্য ডাকা হলেও সিজিও কমপ্লেক্সে যাননি তিনি৷ তাই এ দিন গোয়েন্দাদের একটি দল পৌঁছে যায় তাঁর অফিসেই৷
সূত্রের খবর, ২০১০ সালে রোজভ্যালি এন্টারটেনমেন্ট সংস্থার সঙ্গে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়৷ কী বলা ছিল সেই চুক্তিতে? দু’পক্ষ ওই চুক্তির মাধ্যমে সহমত হয়েছিল ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রোজভ্যালির এন্টারটেনমেন্ট চ্যানেল রূপসী বাংলায় মোট ৭০টি ছবি দেখানো হবে৷ সেই ছবিগুলি অবশ্যই শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের হতে হবে৷ এর মধ্যে থাকতে হবে সদ্য রিলিজ করা বেশ কিছু ছবিও৷ রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুন্ডু তদন্তকারীদের জানান, চুক্তি থাকলেও ওই সময়ের মধ্যে মাত্র ৩০টি ছবি দেওয়া হয়েছিল৷ অথচ সমস্ত ছবি দেখানো হবে বলে তাঁর কাছ থেকে মোট ২৫ কোটি টাকা নিয়ে নেওয়া হয়৷ এই অভিযোগের বিষয়ে পরে আদালতেও অভিযোগ দায়ের করেন গৌতম৷
সিবিআই সূত্রে খবর, কাদের মধ্যস্থতায় চুক্তি হয়েছে, এই টাকা কাকে কাকে দেওয়া হয়েছে এসব বিষয় জানার জন্যই শ্রী ভেঙ্কটেশের কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে জানতে চাওয়া হবে৷ কারণ যে সময় চুক্তি সাক্ষরিত হয়, তখন রোজভ্যালি এন্টারটেনমেন্ট বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সাংসদ তাপস পাল, যাঁকে এর আগে এই মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। জেরার জবাবে তাপসের থেকেও এই বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছিল বলে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। সেই তথ্য পরীক্ষা করার জন্যই মোহতাকে জেরা করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে৷এর আগেও পুরোনো একটি চুক্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে বাংলা ছবির প্রখ্যাত প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে রোজভ্যালি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই৷
