নিজস্ব প্রতিনিধি, বীরভূম: ‘‘আমার বাড়িতে এল, আর আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করল না’’, বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস বোলপুর কার্যালয়ে সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে বসে বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সম্পর্কে এমনই বিস্ফোরক দাবি বাসুদেব দাস বাউলের। গত সপ্তাহে বোলপুরে কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রতনপল্লীর শ্যামবাটিতে ওই বাউল শিল্পীর ঘরে মধ্যাহ্নভোজন করেন৷ এদিন বাসুদেব দাস বাউল বলেন, ‘‘অমিত শাহের মতো ব্যক্তি আমার বাড়িতে এসে খাওয়া-দাওয়া করলেন, অথচ আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেন না। বাড়িতে এমএ পাস করা আমার মেয়ে বসে আছে৷ টাকা পয়সার অভাবের জন্য তাঁর কিছু করতে পারছি না এখন। সেটা বলার সুযোগ পেলাম না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘দিদি এখানে আসছেন আমাদের নেমন্তন্ন করেছেন আমি সেদিন অন্যান্য বাউল শিল্পীর সঙ্গে উপস্থিত থাকব। যদিও আমরা শিল্পী আমরা কোনও দলের নয়। যে ডাকবে তার কাছেই যাব৷’’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, শিল্পী কোনও দলের হয় না৷ যে ডাকবে তার কাছেই যাবেন তিনি৷ প্রসঙ্গত, গতকাল বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, মমতার সভার মিছিলে বাসুদেব দাস বাউলকে দেখাও যেতে পারে৷ তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতে ওই বাউলকে নিজের পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন কেষ্ট৷ শাহের এই ভোজনকে ‘অভিনয়’ বলে কটাক্ষ করেন অনুব্রত। জেলা তৃণমূল সভাপতি আশ্বস্ত করেন, তাঁর মেয়ের বিএড ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা দলের পক্ষ থেকে করে দেওয়া হবে।
যদিও এ ঘটনাকে তৃণমূলের নোংরা রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেছেন জেলার বিজেপি নেতৃত্ব৷ জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল বলেন, ‘‘এটাই তৃণমূল এর নোংরা রাজনীতি। তারা খুন করাবে আর যে খুন হবে তার বউকে দিয়ে বলাবে খুনি ব্যক্তি তার স্বামীকে খুন করেনি। কোন মেয়ে ধর্ষিতা হলে তার বাবা কে দিয়ে বলাবে অভিযুক্ত ধর্ষণ করেনি। এটা নতুন কিছু নয় তৃণমূলের আগেও করেছে। এটাই ওদের নোংরা রাজনীতির পরিচয়৷’’ বঙ্গ সফরে এসে বাসুদেব দাস বাউলের বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়েছিলেন অমিত শাহ৷ যিনি রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছিলেন। তাঁর বাড়িতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজন করেন৷ পরে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেন৷ এদিন সেই বাউল শিল্পীকেই বোলপুরের জেলা তৃণমূল কার্যালয়ের একমাত্র কন্যা-সহ দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলের পাশে। এপরেই তাঁর বিরুদ্ধে উল্টো সুর শোনা গেল বাসুদেব দাস বাউলের গলায়৷ এর নেপথ্যে কী তাহলে তৃণমূল? নাকি বাসুদেবের অভিযোগই সত্য? উঠছে প্রশ্ন৷