সিএএ ঠিক কী? কারা আবেদন করবেন?

সিএএ ঠিক কী? কারা আবেদন করবেন?

CAA citizenship

কলকাতা:  লোকসভা ভোটের ঠিক আগে দেশজুড়ে চালু সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)৷ সোমবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিএএ চালু হওয়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পর থেকেই দেশজুড়ে শোরগোল পড়েছে৷ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে সিএএ কী? সে বিষয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারনা নেই৷ তাহলে দেখা নেওয়া যাক সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের খুঁটিনাটি বিষয়৷ 

এই আইনে বলা হয়েছে, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ১৯৮৭ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যাঁদের জন্ম, তাঁরা জন্মসূত্রেই ভারতীয় নাগরিক। এ ক্ষেত্রে তাঁদের বাবা-মায়ের নাগরিকত্ব দেখা হবে না। কিন্তু, ১৯৮৭ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে যাঁদের জন্ম, তাঁদের জন্মের সময় বাবা-মায়ের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্ব থাকলে তবেই তাঁরা ভারতীয় হিসেবে গণ্য হবেন।

সিএএ আইনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় উৎপীড়ন বা অন্যান্য নিপীড়নের কারণে যাঁরা এ দেশে শরণার্থী হয়ে এসেছেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ওই সব দেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা সংশোধিক নাগরিকত্ব আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনে স্পষ্ট ভাবে অ-মুসলিমদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ কিন্তু যাঁরা মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত তাঁদের কথা বলা হয়নি। অর্থাৎ ওই ছয় সম্প্রদায় ছাড়া পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান বা অন্য কোনও দেশ থেকে আসা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।

১৯৫৫ সালের আইনের সঙ্গে নয়া আইনে পার্থক্যটা কোথায়?

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে নয়া আইনের উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে৷ আগের আইনে কোনও ধর্মের উল্লেখ ছিল না। ২০১৯ সালে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার  যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ কের, তাতে স্পষ্টভাবে ধর্মের উল্লেখ করা হয়। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছিল, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বা ভারতীয় উপমহাদেশে জন্মানো নাগরিক নির্দিষ্ট মেয়াদের বেশি এদেশে থাকলে কিনি নাগরিকত্ব পাবেন। এক্ষেত্রে কোনও ধর্মের উল্লেখ ছিল না। বলা হয়েছিল, নাগরিকত্ব পেতে টানা এক বছর ভারতে থাকতে হবে। এ ছাড়াও পুরনো আইন অনুযাযী, বিগত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতে থাকা ছিল বাধ্যতামূলক। নতুন আইনে ১১ বছরের সময়কাল কমিয়ে পাঁচ বছর করে দেওয়া হয়৷

এখন আসা যাক, কাদের জন্য  এই নাগরিকত্ব আইন?

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু, বৌদ্ধ,জৈন,শিখ, পার্সি এবং খ্রিস্টানরা যদি ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতের কাছে আশ্রয় চান, সে ক্ষেত্রে তাদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। ভিসা বা পাসপোর্টের মতো নথি না থাকলেও ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য তাঁরা আবেদন জানাতে পারবে?  ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যাঁরা আশ্রয় চেয়েছিলেন এবং ভারতে ৫ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এ দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের জানাতে পারবেন৷ 

তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই বৈধভাবে ভারতীয় নাগরিক, তাঁদের জন্য সিএএ নয়। প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আসা  সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু নাগরিকদের নির্দিষ্ট শর্ত পূরণের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেবে সিএএ৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − three =