কলকাতা: দরজায় কড়া নাড়ছে একুশের বিধানসভা নির্বাচন। চলতি মাস থেকেই বাংলায় শুরু হয়ে যাচ্ছে বহু চর্চিত ভোটযুদ্ধ। রাজনৈতিক আক্রমণ প্রতি-আক্রমণ, দলবদল, সর্বোপরি ভোট প্রচারে অভিনবত্ব নিয়ে জমজমাট এই প্রাক-নির্বাচনী আবহে প্রকাশিত হল জনপ্রিয় সংবাদসংস্থা এবিপি আনন্দের সি ভোটার সমীক্ষা।
ভোটের আগে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক উন্মাদনাকে আরো খানিক উস্কে দেওয়ার জন্য গড়ে ওঠে নানা সমীক্ষা। সমীক্ষার পর্যবেক্ষণের সঙ্গে ভোটযুদ্ধের ফলাফলের আদেও কোনো প্রত্যক্ষ সংযোগ নেই। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে প্রায় ১৯৩১৪ জন ভোটারের দরবারে ভোট সংক্রান্ত বিচিত্র প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সি ভোটার সমীক্ষকরা। গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মার্কশিট কতটা উজ্জ্বল? কে দখল করতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মসনদ? ভোটের আগে এবার বাংলায় প্রভাব সৃষ্টিকারী সবথেকে বড় ইস্যুই বা কোনটা? সি ভোটার সমীক্ষা উত্তর দিয়েছে এমনই সব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের।
একুশের বঙ্গ ভোটে বেকারত্ব তথা কর্মসংস্থানকেই সবথেকে বড় ইস্যু হিসেবে বেছে নিয়েছেন সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী। দেখা গেছে প্রায় ৩৫% মানুষ মনে করছেন বেকারত্বের ইস্যু ভোটে বড়সড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। এছাড়া বিদ্যুৎ জল রাস্তা প্রভৃতি সরকারি পরিষেবামূলক বিষয়গুলিও উল্লেখযোগ্য ফ্যাক্টর হতে পারে, মনে করেছেন প্রায় ২০% মানুষ। করোনা অতিমারী ও তার পরবর্তী পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে ভোট দিতে যাচ্ছেন ১৫% এবং সরকারি ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে প্রভাবিত হচ্ছেন ১৩% মানুষ। এছাড়া শিক্ষার সুযোগ সুবিধা, CAA, NRC-র মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় আইন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নারী নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ প্রভৃতির মতো বিষয়ও হতে পারে কার্যকরী।
সি ভোটার সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এযাবৎ ভালো কাজ করেছেন নরেন্দ্র মোদী, মনে করেন ৪৬% মানুষ। এছাড়া ১৬% মোটামুটি ও ৩৮% খারাপ কাজের পক্ষে রায় দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মার্কশিটও সি ভোটার সমীক্ষায় উজ্জ্বল। ৫৪% মানুষ মনে করেছেন তিনি ভালো কাজ করেছেন। এছাড়া মোটামুটি ২০ এবং খারাপের পক্ষে রায় দিয়েছেন ২৬% মানুষ। এমতাবস্থায় বাংলায় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে কে বসতে চলেছেন তারও পর্যালোচনা হাতে এসেছে সি ভোটারের মাধ্যমে।
এক্ষেত্রে দেখা গেছে ৫২% মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ফের মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চান। কিন্তু গেরুয়া নেতা দিলীপ ঘোষও পেয়েছেন ২৭% ভোট। এছাড়া, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সুজন চক্রবর্তী (৩%), মুকুল রায় (৭%), অধীর রঞ্জনা চৌধুরী (৩%) এবং অন্যান্য (৮%)। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে সি ভোটার সমীক্ষার এই ফলাফল নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তরজা।