কলকাতা: করোনা আবহে শর্তসাপেক্ষে বাস চালানোর পক্ষে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ ২০ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালাচলে ছাড়পত্র দিলেও বেঁকে বসেছিলেন বাস মালিক সংগঠনগুলি৷ এবার বাস মালিকদের ঘাটতি পুষিয়ে সাধারণ জনতার ঘরে বাড়তি ভাড়া চাপানোর বন্দোবস্তে সিলমোহর মিলেছে৷ জানানো হয়েছে বর্ধিত বাস ভাড়ার পরিমাণ৷
সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে কলকাতা-সহ বাংলার বিভিন্ন জেলায় চলাচল করবে বাস৷ সরকারি নিয়ম মেনে বেসরকারি বাসে সর্বোচ্চ ২০ জন যাত্রীকে তোলা যাবে৷ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিন বাস মালিক সংগঠনগুলির একাংশ৷ আপদকালীন পরিস্থিতি আপাতত ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয় সংগঠনগুলির তরফ৷ বাস মালিকদের দাবি, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ২০ জন যাত্রী তুলে বাস চালালে লোকসান হবে৷ আর সেই কারণে বাড়াতে হবে ভাড়া৷ ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি বাস মালিকদের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়৷ সেই মর্মে আজ নতুন বর্ধিত ভাড়া ঘোষণা করা হয়েছে৷
বাস মালিক সংগঠনের একাংশ জানিয়েছে, প্রথম ৪ কিলোমিটারের জন্য বাস ভাড়া এক লাফে বেড়ে ২০ টাকা করা হয়েছে৷ ৪ কিলোমিটার থেকে ৮ কিলোমিটারের জন্য ভাড়া আরও বাড়বে৫ টাকা৷ অর্থাৎ ৮ কিলোমিটারের জন্য ভাড়া হবে ২৫ টাকা৷ ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতি ৪ কিলোমিটারে বাড়বে ৫ টাকা করে ভাড়া৷ ২০ কিলোমিটারের প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা করে বৃদ্ধি হবে৷ ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংগঠনগুলি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে বসে৷ বাসের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সংগঠনগুলির উপর ছেড়ে দেওয়া হয়৷ সেই মর্মে আজ বাস সংগঠনগুলির তরফের করা হয় বৈঠক৷ সেই বৈঠকে একধাক্কায় বেশ খানিকটা বাস ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে সংগঠনগুলির তরফে৷ আপাতত এই বর্ধিত বাস ভাড়া নিয়ে চলবে বাস৷ অন্যদিকে, বাসের পাশাপাশি হলুদ ট্যাক্সির ভাড়াও একধাক্কায় ৩০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তুতি চলছে৷ মিটারে ১০০ টাকা ভাড়া উঠলে, যাত্রীকে ১৩০ টাকা দিতে হতে পারে৷ এমনই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে শহরের ট্যাক্সি ইউনিয়নের একাংশ৷ তবে যদি এই প্রস্তাবে সরকারি সিলমোহর পড়ে, তাহলে মাথায় হাত পড়তে পারে শহরবাসীর৷
তবে করোনা মহামারীর পরিস্থিতির মধ্যে মানুষের যখন উপার্জন কমে গিয়েছে, কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ, তখন ৭ টাকার ন্যূনতম ভাড়া হঠাৎ করে ২০ টাকা হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বেশ বিপাকে পড়তে চলেছেন বাস যাত্রীদের একাংশ৷ এক লাফে এতটা বাস ভাড়া বৃদ্ধি না করে সরকারিভাবে বাসমালিকদের ভর্তুকি দিয়ে দেওয়া যেত না? এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীদের একাংশ৷
বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ানোর বিরুদ্ধে এসইউসিআই(সি) দলের রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, “বেসরকারি বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বৃদ্ধির যে প্রস্তাব বাস মালিকরা দিয়েছেন, তার আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি৷ এমনিতেই লকডাউনের পরিস্থিতিতে সাধারণ গরীব মানুষের কোন উপার্জন নেই৷ ফলে আর্থিকভাবে তারা অত্যন্ত বিপর্যস্ত৷ এই অবস্থায় বাসের ভাড়া ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা অত্যন্ত অমানবিক৷ পরিবহণ যেহেতু একটি পরিষেবা, আমাদের দাবি রাজ্য সরকার ভর্তুকি দিয়ে বাস চালানোর ব্যবস্থা করুক৷ যাতে মানুষ বর্তমান ভাড়াতেই যাতায়াত করতে পারেন৷”