করোনা রুখতে দেদার বিক্রি ‘ইমিউনিটি সন্দেশ’! মহামারীর সুযোগে নয়া বিজ্ঞাপন

করোনা রুখতে দেদার বিক্রি ‘ইমিউনিটি সন্দেশ’! মহামারীর সুযোগে নয়া বিজ্ঞাপন

কলকাতা: লকডাউন শিথিল হওয়ার ফলে বাড়ছে সংক্রণের আশঙ্কা। এই সময় বাড়ির বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শরীর সুস্থ রাখাটাই প্রত্যেকের কাছে একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। যে কোনও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে লক ডাউন কালে ঘরে বসে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘন ঘন হাত ধোয়া, মুখোশ ব্যবহারের নিয়ম পালন করার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন সাধারণ মানুষ ।তবে শরীর সুস্থ রাখতে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। তাই এই করোনা কালে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কী খাওয়া উচিৎ আর কী নয় তা নিয়ে  মাথা ঘামাতে শুরু করেছেন অনেকেই।আর ঠিক এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে  বিপননের নতুন কৌশল নিয়েছে খাবার এবং ওষুধের ব্যবসায় যুক্ত অনেক সংস্থা। 

যেমন কলকাতার জনপ্রিয় মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বলরাম মল্লিক,রাধারমণ মল্লিক। ওই মিষ্টান্ন বিপনী করোনা আবহে বাজারে নতুন মিষ্টি নিয়ে এসেছে, এর নাম 'ইমিউনিটি সন্দেশ'।এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়া ফেলেছে এই মিষ্টি। রাজ্য তথা দেশ জুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও, নাগরিকদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই মিষ্টি সহায়তা করবে বলে দাবী করেছেন “বলরাম মল্লিক ও রাধারমন মল্লিক” এর কর্তৃপক্ষ। 

তাঁদের মতে, এই মিষ্টি সম্পূর্ণভাবে কোনও কৃত্রিম উপাদান বা চিনি ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে। এটি হিমালয়ের মধু দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ফলে এটি স্বাস্থ্যকর এবং কম ক্যালরিযুক্ত। এই সন্দেশে বাদাম এবং ড্রাই ফ্রুটস ছাড়াও হলুদ, মধু, তুলসী, এলাচ, জষ্টি মধু এবং অন্যান্য ঔষধি গুণাগুণযুক্ত প্রায় ১৫ টি উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সংস্থার কর্ণধার সুদীপ মল্লিক জানিয়েছেন, “ছোট থেকেই ভেষজের সঙ্গে আমাদের পরিচয়। তা সে কালো জিরে হোক বা হলুদ। ছোট এলাচ হোক বা তেজপাতা। সবগুলিই কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সবই আমরা রান্নায় ব্যবহার করি। আমার মনে হয় এই কারণেই বঙ্গদেশে করোনা এখনও তেমন সুবিধে করতে পারেনি।”

এই ভাবনা থেকেই সুগার ফ্রি ভেষজ সন্দেশ তৈরির আইডিয়া মাথায় আসে। তারপরই সুদীপবাবু আয়ুর্বেদ চিকিৎসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কথা বলে তৈরি করেন সন্দেশের রেসিপি। সুদীপবাবু জানিয়েছেন, মিষ্টি মেশালে ভেষজের গুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই মধু মেশানো হয়েছে। কিন্তু হিমালয়ের মধু কেন? “আসলে সুন্দরবনের মধুতে ঝাঁজ আছে। তাই মিষ্টি তৈরি করা মুশকিল। হিমালয়ের মধুতে সে সমস্যা নেই।”-কারণটা স্পষ্ট করলেন সুদীপবাবু।

আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরাও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তাঁদের মত, ভাগ-মাপ মেনে যদি ভেষজ মিষ্টি তৈরি করা হয় তাহলে কাজ হবেই। কারণ তুলসি থেকে শুরু করে হলুদ, যষ্ঠীমধু, কালো জিরে সবই ‘ইমিউনোমডিউলেটর’। এইসব ভেষজে অনুপান হিসাবে মধু ব্যবহার হয়। যা সন্দেশে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। সুদীপবাবুর দাবি, করোনা ছডি়য়ে পড়ার পর থেকেই ভাবনাচিন্তা চলছিল। ঝড়ের আগেই পরীক্ষামূলকভাবে মিষ্টি তৈরি করা হয়। তবে বাজারজাত করা হল শনিবার থেকেই। মহার্ঘ্য এই সন্দেশের দাম রাখা হয়েছে পঁচিশ টাকা। সুদীপবাবুর আশা, করোনা পর্বে এই মিষ্টি মানুষের শরীর ও মনের জোর বাড়াবে। বিশ্বাস বাড়বে আয়ুর্বেদের উপর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen + 4 =