টেট পাশ করেও মেলেনি চাকরি, সংসদের দুয়ারে দৃষ্টিহীন যুবক

টেট পাশ করেও মেলেনি চাকরি, সংসদের দুয়ারে দৃষ্টিহীন যুবক

মেদিনীপুর: ছোট থেকেই তিনি একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দূরে সরিয়েই চাকরির পরীক্ষায় বসেছিলেন৷ তাতে সফলও হন৷ কিন্তু, চাকরি পাননি ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ সাহেব৷ বুধবার হাজরার মোড়ে চাকরির দাবিতে যখন দফায় দফায় বিক্ষোভ চলছে, তখন সাবেহ যান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক কেমপা হোন্নাইয়ের দফতরে৷ আইএএস অফিসার কেমপাও একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন। সাহেবের মুখ থেকে সবটা শোনার পর তাঁকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দেন হোন্নাই। তাঁর পরামর্শেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বিষইয়ের দফতরে যান সাহেব। 

আরও পড়ুন- আবার নূপুর শর্মাকে তলব কলকাতা পুলিশের, এবার নতুন থানা

সাহেবের কথায়, ‘‘ইন্টারভিউ ভাল দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম নিয়োগ তালিকায় আমার নাম ছিল না। দ্বিতীয় তালিকাতেও আমার নাম ওঠেনি। কেন নাম এল না সেটাই বুঝতে পারছি না৷’’ সাহেব জানান, এই মর্মেম তিনি হাই কোর্টে মামলাও করেছেন। মামলাটি আপাতত বিচারাধীন রয়েছে। তিনি আরও জানান, তিনি মানিক ভট্টাচার্যের কাছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু, ওখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে। রত্না চক্রবর্তী বাগচীর কাছেও অনুরোধ করেছিলেন যাতে তাঁর দরখাস্তটা অন্তত দেওয়া হয়। উনি দরখাস্ত গ্রহণই করেননি।’’ সাহেবের আক্ষেপ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেবেন। টেট উত্তীর্ণ হয়েও এখনও নিয়োগপত্র পেলাম না।’’

অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তান সাহেব৷ বাবা  প্রদ্যোতও দৃষ্টিহীন৷ মা পুষ্পা গৃহবধূ। তিনিই সংসার সামলান৷ এক সময়ে মুড়ি ভেজে পেট চালিয়েছেন। সাহেব বলেন, ‘‘মায়েরও তো বয়স হচ্ছে। এখন আর বেশি মুড়ি ভাজতে পারেন না। আমার একটা চাকরির খুব দরকার।’’

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গুচ্ছ মামলা হয়েছে হাই কোর্টে৷ স্বজনপোষণ থেকে, মেধা তালিকায় সামনে থাকা প্রার্থীকে টপকে পিছনের প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ভুড়ি ভুড়ি৷ তবে এসবের ভিড়ে আপাতত সাহেবের সমস্যার যে কোনও সুরাহা হচ্ছে না, তা প্রায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন  প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বিষই। তাঁর কথায়, ‘‘উনি আমাদের দফতরে এসেছিলেন। ওঁকে যা বলার বুঝিয়ে বলেছি। উনিও বুঝতেও পেরেছেন৷ এই বিষয়ে জেলা সংসদের কিছু করণীয় নেই।’’ তবে সংসদ চেয়ারম্যান বলেছেন, উনি দৃষ্টিহীন৷ উনি চাকরি পেলে তো আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *