টলিউড নিয়ে বিজেপির বৃহত্তর পরিকল্পনা! শিল্পীদের সঙ্গে প্রকাশ-বৈঠক কি সূচনা?

টলিউড নিয়ে বিজেপির বৃহত্তর পরিকল্পনা! শিল্পীদের সঙ্গে প্রকাশ-বৈঠক কি সূচনা?

কলকাতা: কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকরের সঙ্গে টলিউড কলাকুশলী এবং পরিচালকদের ছবি দেখে ভোটের আগে আবার বেশ সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। কিছুদিন আগে বিজেপিতে যোগদান করেছেন – রুদ্রনীল ঘোষ, হিরণ, যশ সহ বেশ কয়েকজন। কিন্তু ভোটের মুখে এই অনুষ্ঠান বিভিন্ন প্রশ্ন উঠিয়েছে। টলিউড নিয়ে বিজেপির বৃহত্তর পরিকল্পনা যে রয়েছে তা সি অনুষ্ঠানে স্পষ্ট।

ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের তরফে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে একঝাঁক টলি-তারকা উপস্থিত। চিত্রগ্রহকদের ফ্লাশের ঝলকানি। একটু পরে এলেন মন্ত্রী। তার সঙ্গে ক্যামেরা বন্দি হলেন তারকারা। ছিলেন – ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, আবীর চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম, তনুশ্রী চক্রবর্তী, পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আরও অনেকেই কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের (Prakash Javadekar) আমন্ত্রণে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে ছিলেন নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর এবং সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ রশিদ খান।

অনুষ্ঠানে অনেকেই নিজের মতামত জানিয়েছেন মন্ত্রীকে। প্রশ্নও করেছেন। কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, বঙ্গের শিল্পী – কলাকুশলীদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব সেরকম ছিলই না। শুরু থেকেই তারা বামপন্থী বা আদি কংগ্রেস। ২০১১ সালে ক্ষমতার আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর অর্ধেকের বেশি টলিউড তৃণমূলের পাশেই ছিল। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে টলিউডের রং বদল যে হবে না তা বলা যাবে না।

অনেকেই ভুলে যাচ্ছেন, ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের তরফে এই অনুষ্ঠান। কেন্দ্রীয় সরকারের। কোনও রাজনৈতিক দলের নয়। সেক্ষেত্রে আপাত দৃষ্টিতে কোনও রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান আটক নয়। কিন্তু, বিজেপি তা সুচারু ভাবে কাজে লাগিয়েছে। অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য টলিউডে তৃণমূলের অসাধু আঁতাতের ফলে শিল্পী, কলাকুশলী, পরিচালক, নির্দেশকদের সমস্যার কথা জানান। যেই সমস্যা নিয়ে আগেও অনেকেই মুখ খুলেছেন। বামপন্থী হিসাবে পরিচিত নির্দেশক অনিক দত্তকেও দেখা গিয়েছে। তার ‘ভবিষ্যতের ভূত’ মুক্তি পাওয়ার সময় কী কাণ্ড ঘটেছিল তা এক প্রকার সকলেই জানেন। কিন্তু, ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের তরফে এই অনুষ্ঠানে গেরুয়া রঙের ছটা খুব বেশি দেখা যায়নি। সতর্ক ছিল বিজেপি। বিজেপি সাংসদ স্বপন দাসগুপ্ত ছিলেন। ছিলেন রুপা গাঙ্গুলি এবং ও অভিনেতা বিশ্বজিৎ।

আসন্ন ভোটে ‘তারকা-স্ট্র্যাটেজি’ যে বিজেপির লুকানো তাস হতে পারে। কিন্তু, টলিউডের সেলেব দের জোর করে দলে না টেনে ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের তরফে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি। এই পরক্ষ প্রচারে যথেষ্ঠ সুক্ষতা ছিল। টলিউড তারকাদের সঙ্গে প্রকাশ জাভড়েকরের এই বৈঠক ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির লক্ষ্যে। কিন্তু তাই সব নয় তা অনেকেই জানে। যদিও  অনেক বিজেপি নেতা দাবি করেছেন, এই অনুষ্ঠান পুরোপুরি অ-রাজনৈতিক। সরকারি অনুষ্ঠান। বাংলা ছবির উন্নতির লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠান। ভাবতে অনুবিধা কী আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *