কলকাতা: দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে রাজ্য বিজেপি যে চিঠি দিয়েছে তার মূল বিষয় হল রাজ্যে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বাধা দেবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কারণেই নিবার্চন কমিশনকে আগাম ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে? ৩৪টি পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ৩৪ পয়েন্ট অনুরোধ এবং পরামর্শ গুলির মধ্যে – পর্যবেক্ষক নিয়োগ, পুলিশ-ব্যবস্থা, অনুমোদন এবং অনুমতি প্রদান সংক্রান্ত বিষয়, ইলেকশন ডিউটি, ইলেকটোরাল রোল, ভোটের দিন যাবতীয় ব্যবস্থার বিষয় বিশেষ ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিজেপি অন্যতম জাতীয় সহ সম্পাদক মুকুল রায়, রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাসগুপ্ত প্রমুখ।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ভারতের মত প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে নির্বাচন আদর্শের লড়াই। গরিব দরদী, জনপ্রিয় সরকার গঠনের জন্যই নির্বাচন। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন মানে যুদ্ধ। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস আর আগে বিভিন্ন ভোটে সন্ত্রাস চালিয়েছে। রাজ্য সরকার পুলিশের সহযোগে এই অরাজকতা, অপশাসন চালায়। অসহায় থাকে জনতা। মতের অমিল গণতন্ত্রে হতেই পারে। কিন্তু, সংবিধানকে কি মনে শাসক দল।
যারা পাবলিক সার্ভেন্ট বা সরকারি কর্মী রয়েছে, তাদের কিছু অংশ অসৎ। তারা সরকারের পক্ষে কাজ করে। তারা সরকারের অনুগত। তবে কিছু অংশ আছে, যারা সৎ ভাবে গণতন্ত্র রক্ষা করে চলে। সুতরাং, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে দেখতে হবে।
২০১৯ এর এপ্রিল-মে মাসে দেশের সাধারণ নির্বাচনে সময় রাজ্যস্তরের পর্যবেক্ষক ছিল। বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তাকে দরকার তা স্পষ্ট জানিয়েছে বিজেপি। রাজ্যস্তরের পুলিশ পর্যবেক্ষকের কথাও বলা হয়েছে। সেই পুলিশ পর্যবেক্ষক যেন ডিজি পদমর্যাদার হয়। এছাড়া আরও ৪ আই জি পদ মর্যাদার অফিসার যেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।
পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের আগে বিজেপির পক্ষে চরম প্রস্তুতি তুঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কে হতে পারেন তা নিয়ে ‘ভাইরাল’ চর্চায় কেন কেন্দ্রীয় পার্টি বিরক্ত তা বুঝে নেওয়া যাক। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হোক তা দলের অভ্যন্তরে অনেকে চাইলেও আম জনতা তাকে কতটা গ্রহণ করবেন তা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দিলীপের বিরুদ্ধ তার দলের কিছু শিবির এই বিষয়ে যে খুশি হবে না তাও আলোচিত হয়েছে। একাধিক মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিদার হতে পারেন বলে শোনা গিয়েছে। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি এবং ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় আবার বঙ্গ রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। তিনিও মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হতে পারেন বলে জোর আলোচনা। অন্যদিকে, অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও পিছিয়ে নেই। বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সক সাধুর নাম উঠে আসছে। কিন্তু, এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে ‘বটতলার আলোচনা’ চায় না বিজেপি।