কলকাতা: বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের একাধিক জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম থেকেই দাবি করছে যে বিজেপি একাধিক ভুল খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তার মনে হয় সবচেয়ে বড় প্রমাণ পাওয়া গেল এবার। বিজেপি সম্প্রতি একটি ভিডিও ছেড়েছিল নেটদুনিয়ায় যেখানে দাবি করা হয়েছিল শীতলকুচিতে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা এক বিজেপি কর্মীকে খুন করেছেন, যার নাম মানিক মৈত্র। কিন্তু সেই ভিডিওতে মানিক মৈত্রর যে ছবি দেখানো হয়েছে তা আদতে দিল্লির এক সাংবাদিক, অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি! ‘মৃত’ সেই ব্যক্তি তথা সাংবাদিক নিজেই ফেসবুক পোস্ট করে জানালেন যে তিনি বেঁচে রয়েছেন এবং বহালতবিয়তেই।
বিজেপি মৃত কর্মীর যে ছবি দেখিয়েছে তা আদতে ‘ইন্ডিয়া টুডে’র সাংবাদিক অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তিনি এই মুহূর্তে রয়েছেন দিল্লিতে। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের মতো ভাইরাল হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। কারণ সেই সাংবাদিক নিজে ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন যে তিনি খুব ভালো ভাবেই বেঁচে রয়েছেন এবং শীতলকুচি থেকে ১,৩০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছেন। ওই সাংবাদিক ফেসবুক পোস্ট করার পর তার ওই পোস্ট আরও বেশি করে ভাইরাল হতে শুরু করে ওই সাংবাদিকের বন্ধু-বান্ধবের দ্বারা এবং অফিসের সহকর্মীদের দ্বারা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে বিজেপি একেবারে ভুল খবর ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে আরো বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সেই ভিডিও তো তুলে নেওয়া হয়েছে কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। কোন কারণ ছাড়াই এই ঘটনার শিকার ওই সাংবাদিক অভ্র জানাচ্ছেন, এটা যদি কোনভাবে খুন বা ধর্ষণের মামলার ব্যাপার হত, এবং তাকে যদি এইভাবে ভুলবশত অভিযুক্ত বলে দেখানো হত, তাহলে অবশ্যই ভাবে তার জীবন অনেক বেশি জটিল হয়ে যেত। যদিও বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে ভুলবশত ওই সাংবাদিকের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে ভিডিওতে কিন্তু আদতে মানিক মৈত্র বলে এক বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দ্বারা।
তবে শুধু এই সাংবাদিকের ঘটনা নয়, এখনো পর্যন্ত একাধিক ঘটনার কথা সামনে এসেছে যেগুলি বিজেপি বাংলার হিংসা বলে চালাচ্ছে কিন্তু সেগুলি আদতে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা নয়। পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশা এবং অন্ধপ্রদেশের একাধিক ঘটনার ছবি বাংলার হিংসার ঘটনা বলে চালাচ্ছে বিজেপি। ইতিমধ্যে তার অনেক প্রমাণ মিলেছে। এমনকি বাংলাদেশের কয়েকটি ঘটনাকেও বাংলার হিংসা বলে দেখিয়ে দিয়েছে বিজেপি। তাই আজ বিকেলের তরফ থেকে সাধারণ মানুষকে আবেদন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যাই দেখবেন সেটাকে বিশ্বাস করবেন না। কোন খবর বিশ্বাস করার আগে বা শেয়ার করার আগে একবার অন্তত ভালো করে দেখে নেবেন যে সেটি আদতে সত্যি খবর কি না।