bjp
কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে নেতাকর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন টলিউডের একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রীও। এসবের কি ফল হয়েছিল তা হাতেনাতে দেখতে পেয়েছে গেরুয়া শিবির। মাত্র ৭৭ টি আসনে থেমে গিয়েছিল বিজেপি। সেই ভুল থেকে কি বিজেপি শিক্ষা নেয়নি? লোকসভা নির্বাচনের আগে আবার তারা দলবদলকে প্রশ্রয় দিতে চাইছে? তৃণমূল ছেড়ে আবার অনেকে বিজেপিতে আসুক, এমনটাই কী চাইছেন বিজেপির কোনও কোনও নেতা? বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার কথায় সেই আভাস পাওয়া গিয়েছে।
ঠিক কী বলেছেন তিনি? ইডি ও সিবিআইয়ের ভয় পেলে বিজেপিতে যোগ দিন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এমনই আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য তৃণমূল এতদিন অভিযোগ করে এসেছে, বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। সেখানে গেলেই সবার দোষ কেটে যায়।
তখন আর তাঁদের দরজায় ইডি-সিবিআই যায় না। তাই অনুপমের এমন বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হবে এটাই স্বাভাবিক। সোমবার বীরভূমের লাভপুরে একটি দলীয় কর্মসূচিতে সামিল হয়ে এ কথা বলেছেন অনুপম। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
অনুপম বলেছেন, “হাতে মোটা বালা, গলায় মোটা সোনার চেন বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই ধরনের যে নেতারা তৃণমূলে রয়েছেন, যাঁদের মনে হচ্ছে যে কোনও সময়ে ইডি-সিবিআই আসতে পারে, তাঁদের বলছি এখন থেকে চুরিটা বন্ধ করুন। আর আমার ফেসবুকে একটা নম্বরও দেওয়া রয়েছে। যদি সামনে এসে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা বলতে লজ্জা লাগে, কানে কানে এসে বলে যান। আমরা দেখব, আপনাদের কীভাবে কাজে লাগানো যায়।” তৃণমূলের দাবি, যে অভিযোগ এতদিন তারা করে আসছিল সেটা অনুপমের এমন বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি যে ফল আশা করেছিল তার ধারে কাছে তারা পৌঁছতে পারেনি। বিষয়টিকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে না পারলে ভোটে যে ভাল ফল হবে না সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন তাঁরা। সেই বার্তা ফের দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু একুশের নির্বাচনের আগে দেখা গিয়েছে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর বদলে বিজেপি বেশি জোর দিয়েছিল দলবদলের উপর। যা ‘সুপার ফ্লপ’ করে। তা সত্ত্বেও বিজেপির একাংশ মনে করছে শাসক দলে যে সমস্ত নেতানেত্রী কোণঠাসা হয়ে রয়েছেন তাঁদের দলে নিয়ে আসতে পারলে সংশ্লিষ্ট বুথগুলিতে সংগঠন কিছুটা হলেও চাঙ্গা হবে। সেই লক্ষ্যে ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মিতালি রায়কে দলে নিয়েছিল তারা। কিন্তু তাতে ফল ভাল হয়নি।
জেতা আসন হাতছাড়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। এমনকী মিতালি রায়ের বুথেও বিজেপির ফল প্রত্যাশার ধারে কাছে পৌঁছয়নি। এতেই স্পষ্ট দলবদল করলেই ভোটবাক্সে লাভ হয় না। তাই বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা সিবিআই ও ইডির প্রসঙ্গ তুলে যেভাবে তৃণমূলের একাংশকে বার্তা দিতে চেয়েছেন তাতে দলের কতটা ভাল হবে, সেটা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠে গেল।