চাকরি দিতে হবে তৃণমূল কর্মীদের! স্বাস্থ্য দফতরে নিয়োগ কেলেঙ্কারি পর্দাফাঁস বিজেপির

চাকরি দিতে হবে তৃণমূল কর্মীদের! স্বাস্থ্য দফতরে নিয়োগ কেলেঙ্কারি পর্দাফাঁস বিজেপির

 

জলপাইগুড়ি:  একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে জলপাইগুড়ির রাজনীতি৷ শনিবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ঢাক ঢোল পিটিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তৃণমূলের জেলা সভাপতির লেখা একটি চিঠিটি ফাঁস করে দেয় বিজেপি৷ যার জেরে আরও একবার প্রকাশ্যে চলে আসে তৃণমূলের নিয়োগ কেলেঙ্কারি৷ এর পর থেকেই উত্তপ্ত হতে থাকে জলপাইগুড়ির রাজনৈতিক মহল৷  

আরও পড়ুন- বাড়ছে উদ্বেগ! নবান্ন থেকে সরছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর! ছ’বছর পর ঠিকানা বদল

 

কী লেখা হয়েছে ওই চিঠিতে?  জানা গিয়েছে, চাকরি দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ওই চিঠিতে চার জন তৃণমূল কর্মীর নাম সুপারিশ করে পাঠিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী৷ কোভিড মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের কাজে তাঁদের নিয়োগের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি৷ চিঠিতে  চারজন তৃণমূল কর্মীর নাম স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে৷ এই চারজন হল স্বরূপ মণ্ডল, শুভঙ্কর মিশ্র, পল্লব দাস এবং শম্ভু দাস৷   এদিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর অভিযোগ, ওই চিঠিতে যে চার জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে, তাঁরা কেউই স্বাস্থ্যকর্মী নন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও কাজের অভিজ্ঞতাই নেই। শুধুমাত্র তাঁদের গায়ে তৃণমূলের ছাপ রয়েছে বলেই এই নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে৷ 

আরও পড়ুন- জেলার বাজারে আলুর দামে আগুন, কলতাকায় ২৫ টাকা দরে বিক্রির নির্দেশ

 

এর পিছনে শাসক দলের অন্য একটি অভিসন্ধিও দেখছে গেরুয়া শিবির৷ তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার কোভিড চিকিৎসার জন্য কোটি কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম, টেস্টিং কিট ইত্যাদি পাঠাচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরে দলীয় কর্মীদের ঢুকিয়ে সেই সব চিকিৎসা সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করতে চাইছে তৃণমূল৷ যদিও বিজেপি’র আনা যাবতীয় অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল৷ 

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী বলেন, বিজেপি যে অভিযোগ এনেছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন৷ তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তিনি যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, সে কথা স্বীকার করেন নেন তিনি৷ তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘করোনা সংকটের মধ্যে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত নানা রকম সাহায্য চেয়ে আমার কাছে ফোন করেন আক্রান্তের পরিবারের সদস্যরা৷ দলমত নির্বিশেষে তাঁরা সাহায্য প্রার্থনা করে৷ কিন্তু আমার একার পক্ষে তা দেখা সম্ভব হচ্ছে না৷ সে জন্যই চার জনের নাম পাঠিয়েছিলাম৷ যাতে তাঁরা দলের হয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারে৷’’ সেই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করে দেন, ‘‘এর অর্থ এটা নয় যে, তাঁরা কেবল তৃণমূলের লোকজনকেই সাহায্য করবে৷’’

আরও পড়ুন- বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার, প্রশাসনের গাফিলতিতে দাহ ১৯ ঘণ্টা পর

 

জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের অবস্থা বিশেষ ভালো নয় বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিমত৷ ক্রমেই জেলায় তৃণমূলের শিকর আলগা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় এই চিঠি নতুন করে তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 4 =