কলকাতা: ২০২১ বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন থেকে বাংলার আর কোনও নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারেনি বিজেপি শিবির। লক্ষ্য পৌঁছানো তো দূর, তার ধারেকাছে পর্যন্ত যেতে পারেনি তারা। এদিকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ধারে-ভারে আরও শক্তিবৃদ্ধি করছে তৃণমূল কংগ্রেস। শেষ কয়েকটি ছোট-বড় নির্বাচন তার প্রমাণ। এই আবহে বাংলার সাংগঠনিক নেতৃত্বের অন্দরে কিছু বদল এনেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাতেও যে খুব বেশি লাভ হয়নি, তার আভাস মিলেছে। শীর্ষ নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, আগের থেকে সাংগঠনিক স্তরে বাংলায় বিজেপি অবস্থা খুব একটা সুখকর নয়।
কয়েক মাস আগেই ১১ জেলার সভাপতি বদল করেছিল বিজেপি বাহিনী। এছাড়া একই সময় থেকে রাজ্যজুড়ে ৫০ শতাংশের বেশি মণ্ডল সভাপতি রদবদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি গেরুয়া শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে আসছে তাতে তারা উপলব্ধি করেছে যে, পদাধিকারী বদলের প্রভাবে বর্তমানে গোটা দলের মনোবল ভেঙে পড়েছে। তৃণমূল স্তরে দলের ভিত নড়বড়ে হয়েছে। আসলে পদাধিকারীদের বদল করা নিয়ে বেশকিছু বিধিনিষেধের কথা বলেছিল বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু বাস্তবে তা মানা হয়নি। নতুন সভাপতিরা নিজেদের মতো করে ‘দল’ গুছিয়ে নিয়েছেন। এই কারণেই পদ খোয়ানো একাধিক কর্মী-নেতারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন, কার্যত বসে গিয়েছেন। তাই গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্য কোনও আন্দোলন বা কর্মসূচিও বিজেপি করতে পারেনি বঙ্গে।
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা নিয়ে জেলাস্তরের কিছু নেতা আবার প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের বক্তব্য, জেলায় জেলায় বিক্ষোভ-অশান্তি বাড়ছে। কারণ দলের নিচু থেকে ওপরতলায় কর্মী-নেতাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, অনেক জায়গায় পুরনো নেতাদের পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না, অনেকে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। এছাড়াও ইচ্ছামতো দল পরিচালনা করার ফলে বেশিরভাগ কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য এই পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগজনক তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।