কলকাতা: নজরে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন৷ পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই দল গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি৷ ইতিমধ্যেই রাজ্য কমিটির তালিকা ঘোষণা ঘোষণা করা হয়েছে৷ নতুন করে সর্বভারতীয় স্তরে নিজের টিমও সাজিয়ে নিয়েছেন সভাপতি জেপি নাড্ডা৷ আর সেই টিমে উল্লেখযোগ্যভাবে মুকুল রায়, অনুপম হাজরা, রাজু বিস্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে৷ কিন্তু বঙ্গ বিজেপির ৩ নেতার দায়িত্ব বাড়লেও রাজ্য কমিটি হোক কিংবা কেন্দ্রীয় কমিটি, সমস্ত দিক থেকেই এবার বাদ পড়েছেন বিজেপির অন্যতম নেতা রাহুল সিনহা৷ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ হারিয়ে সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন রাহুল সিনহা৷ দিল্লি গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এলেও ফিরে পাননি পদ৷ নিজের পুরোনা পদ ফিরে না পাওয়ায় এবার কি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন ৪০ বছর বিজেপি করে আসা রাহুল? জল্পনা বাড়িয়েছেন খোদ এই প্রক্তন কেন্দ্রূয় নেতা৷
কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ হারিয়ে এর আগে সরাসরি মুকুল রায় ও অনুপম হাজরার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন রাহুল সিনহা৷ ৪০ বছর বিজেপিকে সেবা করার পর এটাই তাঁর পুরস্কার বলেও আক্ষেপ করেন রাহুল৷ কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ চলে যেতেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন রাহুল৷ সরাসরি মুকুল রায় ও অনুপম হাজরাকে বিঁধে বিজেপিতে তৃণমূল নেতাদের গুরুত্ব পাচ্ছে বলেও তুলেছেন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন৷ দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে আগামী দিনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির নেতা৷
দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রাহুল সিনহা আগে বলেছিলেন, ‘‘৪০ বছর ধরে বিজেপির সেবা এবং বিজেপির একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করছি৷ বিজেপির জন্মলগ্ন থেকে বিজেপির সেবা করার পুরস্কার এটাই যে, তৃণমূলের নেতা আসছে৷ তাই আমাকে সরে যেতে হবে৷ এর থেকে বড় দুর্ভাগ্যের কিছু হয় না৷ পার্টি যে আজ আমাকে পুরস্কার দিল, সেই পুরস্কারের পক্ষে-বিপক্ষে কিছু আমি বলতে চাই না৷ আমি যা বলার এবং আমার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঘোষণা করে দেব৷’’
রাহুল সিনার এই বিদ্রোহ ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা৷ তাহলে কি পদ না পেয়ে এবার বিজেপি ছাড়বেন রাহুল সিনহা? পদ ফিরে পেতে দিল্লি গিয়েও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল৷ কিন্তু, দিল্লি থেকে ফাঁকা হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে৷ এরপর দলের কাজ আর তাঁকে দেখা যায়নি৷ বিজেপি নবান্ন অভিযানেও যাননি রাহুল৷ এবার সরাসরি দল বদলের জল্পনায় রাহুল সিনহার দাবি, ‘‘আগামী দিনে কী ভাবনা রয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন করেছিলেন তৃণমূলের দুই সম্মানীয় নেতা৷ ফোনে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে৷ আমি আমার অবস্থান আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জানিয়ে দেব৷’’
তবে, কে তাঁকে কী প্রস্তাব নিয়ে ফোন করেছিলেন, সংবাদমাধ্যমে অবশ্য রা কাড়েননি রাহুল সিনহা৷ রাহুলের বিদ্রোহকে কাজে লাগিয়ে নতুন রণকৌশল ছকছে তৃণমূল? তাহলে কি তৃণমূলের দরজা খুলছে রাহুল সিনহার কাছে? যদিও তৃণমূল তো আগেই সবার জন্য দরজা খুলে দেওয়া প্রস্তাব দিয়েই রেখেছে৷ পদ না পেয়ে ভোটের আগে কি সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন ৪০ বছর বিজেপি করা রাহুল সিনহা? কিন্তু, এতদিন যে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে লাগাতার বিদ্রোহ জানিয়ে এসেছেন, সেই গেরুয়া নেতা রাতারাতি সবুজ হয়ে নেত্রীর আনুগত্য দেখানোর সুযোগ পাবে? রাজনীতিতে তো সব কিছুই হয়, হয়েও এসেছে৷ এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া রঙ মুছে সবুজ অভিযান, আদৌ ভোট বাক্সে তার বিল্পব ঘটাবে কি না, জবাব লুকিয়ে সময়ের গর্ভে৷