বাংলার বিজেপি’র ভিত গড়েছিলেন তিনি, দিলীপকে কেমন ‘পুরস্কার’ দিল দল?

বাংলার বিজেপি’র ভিত গড়েছিলেন তিনি, দিলীপকে কেমন ‘পুরস্কার’ দিল দল?

 কলকাতা: 

বিজেপির থেকে দিলীপের কী এই ‘পুরস্কার’-ই পাওনা ছিল? সত্য সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ! থুরি, কী বিচিত্র এই বিজেপি! চিরকালীন এই বাক্যটি রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের ক্ষেত্রে এভাবে যে খেটে যাবে সেটা এক বছর আগেও কেউ ভাবতে পারেননি। বঙ্গ বিজেপিকে কার্যত শূন্য থেকে সাবালক করেছেন তিনি। এক লাফে বিজেপির আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮-তে নিয়ে গিয়েছেন। বিধানসভায় বিজেপি ব্যর্থ হলেও দিলীপের হাত ধরে ৭৭টি আসনে পৌঁছে গিয়েছিল গেরুয়া শিবির। রাজ্য বিজেপির তৎকালীন সভাপতি দিলীপের গড়ে দেওয়া সেই মজবুত ভিতের উপর দাঁড়িয়েই বিজেপি আগামী দিনে বাংলায় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে। অথচ এতকিছুর পরেও রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের কাছ থেকে কী ‘পুরস্কার’-ই পেলেন দিলীপ! 

পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যে এলেও তাঁর মঞ্চে ওঠার জন্য একবারও ডাক পেলেন না দিলীপ। বারাসতের সমাবেশে দিলীপ নিজের থেকে গিয়ে আর পাঁচ জনের সঙ্গে নীচের চেয়ারে বসেছিলেন। কিন্তু তাও মঞ্চে তাঁকে কেউ ডাকেননি। এত উপেক্ষা, এত অবহেলা, এত তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা! পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট শতাংশ ৪০-এ নিয়ে গিয়েছিলেন দিলীপ, এটাই কী তাঁর ‘অপরাধ’? একজন আদি বিজেপি নেতার এই পরিণতি কিন্তু দলের কর্মী-সমর্থকরা একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না।   

বিজেপি প্রথম দফায় যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তার মধ্যে বাংলার ২০টি কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু সেখানে দিলীপের নাম নেই। ব্যাপারটা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে আদৌ দিলীপকে এবার প্রার্থী করা হবে কিনা সেটা নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন ‘ক্যাপ্টেন’-এর এই পরিণতি কী কাম্য ছিল? এখন রাজ্য বিজেপি বলতে মূলত বোঝায় শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদারকে। তাই প্রশ্ন উঠছে রাজ্যে যদি বিজেপি গতবারের থেকে খারাপ ফলাফল করে, অর্থাৎ ব্যর্থ হয়, তখন সেই দায় এই দুই নেতা নেবেন তো? নাকি তাঁরা তখন নানা যুক্তি তুলে ধরে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন? এই পরিস্থিতিতে দিলীপ কিন্তু একবারের জন্যও দলবিরোধী কোনও মন্তব্য করেননি। দলের ‘লাইন’ অনুযায়ী চলছেন তিনি। তাই বিজেপির পরবর্তী প্রার্থী তালিকায় দিলীপ ঘোষের নাম থাকে কিনা, আর থাকলেও তাঁর জেতা মেদিনীপুর কেন্দ্রের নাম থাকে কিনা, সেটা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *