‘বিজেপি, সিপিএম কর্মীরা সম্মানের সঙ্গে রাজনীতি করতে পারবে না, এটাই তালিবানিকরণ’

‘বিজেপি, সিপিএম কর্মীরা সম্মানের সঙ্গে রাজনীতি করতে পারবে না, এটাই তালিবানিকরণ’

কলকাতা: রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন পশ্চিমবঙ্গ তালিবানিকরণ হয়েছে। রাজ্যকে আফগানিস্তান হতে দেব না। কিন্তু এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা কী? সম্প্রতি সভাপতি হিসাবে তার প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন – রাজ্যে বিরোধী দলগুলির ঝান্ডা বহনকারী রাজনৈতিক কর্মীদের জীবন বিপদে। তাদের নিজের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা নেই।

সুকান্তবাবুর মতে, কতগুলি আফগানিস্তানের লোক জোব্বা পরে বন্দুক নিয়ে হাঁটছে, তা-ই শুধু তালিবানিকরণ নয়। তালিবানিকরণ হল, আমার মত’টা ঠিক, তা না মানলে আমি তোমাকে মেরে ফেলবে – এই রকম পরিবেশ। পশ্চিমবঙ্গ ভারতের শিক্ষা-সংস্কৃতির রাজধানী। সেখানে বিরোধী রাজনৈতিক দল করে বলে যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে এবং তার সারমেয়কেও পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে – এমন ঘটনা তালিবানিকরণ।

সুকান্ত বাবু আরও জানান, একজন বিজেপি কর্মী বিজেপির পতাকা নিয়ে যেতে পারবে না। নিলে, তার বাড়িতে হামলা হবে, সেটা তালিবানিকরণ। একজন সিপিএম কর্মী সম্মানজনক ভাবে সিপিএম করতে পারবে না – এটা তালিবানিকরণ। তিনি মত দেবেন, তার শাড়ির পাড়ের রঙে বিল্ডিংয়ের রং হবে, তিনিই রাজা, তিনিই রানী, তিনিই বিচারক। একটা ফ্যাসিস্ট সরকার।

দিলীপ ঘোষের পরিবর্তে সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির সভাপতি হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসাবে দিলীপ ঘোষের গমন প্রায় নিশ্চিত ছিল। কারণ, বিজেপি’র সংবিধান অনুযায়ী কোনও সভাপতি টানা তৃতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হতে পারেন না। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সভাপতি হয়েছিলেন দিলীপ। দুই পর্যায়ে সভাপতিত্বে’র মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার মুখে। অন্যদিকে, সভাপতি হিসাবে তিনি ৬ বছরও সম্পূর্ণ করেছেন। সেক্ষেত্রে ওই পদে নতুন মুখ দেখার অপেক্ষা করছিলেন তামাম বিজেপি সমর্থক, নেতা, কর্মীরা।

তবে এটা ঠিক, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সুকান্তবাবুর সুসম্পর্ক ছিল বরাবর। সুকান্তবাবুকে দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ট বলা যায়। সেক্ষেত্রে, তার সভাপতিত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে দিলীপ বাবুর ভূমিকা অস্বীকার করা যায়না। কিন্তু, সুকান্ত বাবু দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ হতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তার জুটি জমার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। কারণ, দিল্লির উচ্চতর নেতৃত্বে চায় রাজ্যে একযোগে কাজ করুক শুভেন্দু-সুকান্ত। শুভেন্দু এবং দিলীপ ঘোষ দুজনেই পার্টিতে নিজের ভূমিকা নিয়ে সচেতন। সেক্ষেত্রে, তারা দুজনের জানেন, কেন্দ্রীয় পার্টি শুভেন্দু-সুকান্ত জুটিকে সফল দেখতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *