কলকাতা: রাজ্যের চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে তা নিয়ে এখনও রাজ্য তোলপাড়। যদিও সেদিন সেখানে আদতে কী হয়েছিল সেই নিয়ে এখনো কোনো রকম উপসংহার ব্যাখ্যা করা যায়নি। তবে আজ সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে। দাবি করা হয়েছে, সেদিন ওই বুথে যা হয়েছিল তার সত্য চাপা দিতে চাইছে রাজ্য পুলিশ। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিরেক্টর অফ সিকিউরিটি জ্ঞানবন্ত সিং!
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, বিজেপির কাছে খবর রয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিরেক্টর অফ সিকিউরিটি জ্ঞানবন্ত সিং ওই জেলার জেলাশাসক, রিটার্নিং অফিসার সহ বেশ কয়েকজনকে নির্দেশ দিচ্ছেন সমস্ত তথ্য চেপে দেওয়ার জন্য। ওই বুথের সেদিন কি হয়েছিল তার তথ্য সামনে আনতে চায় না রাজ্য পুলিশ। এর পাশাপাশি তিনি আরো দাবি করেছেন, রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাকি রাজ্য পুলিশ হুমকি দিচ্ছে যাতে ওই ভিডিও ফুটেজ কখনো সামনে না আসে। উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আঘাত পাওয়ার পরে নিরাপত্তা অধিকর্তা হিসেবে জ্ঞানবন্ত সিংকে দায়িত্ব দিয়েছিল খোদ নির্বাচন কমিশন। এখন বিজেপি তাঁর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে। এর পাশাপাশি বিজেপির নিশানায় রয়েছেন রাজ্য কমিশনের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাব। দাবি করা হচ্ছে তিনিও সঠিক ভাবে স্বচ্ছ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনছেন না। সবমিলিয়ে শীতলকুচি কাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতির উত্তাপ আরো বাড়িয়ে দিল বিজেপির এই সাংবাদিক বৈঠক।
জয়প্রকাশ আরও দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শীতলকুচির ঘটনায় যে সিআইডি তদন্তের কথা বলেছেন, সেই তদন্তের রিপোর্টে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দোষারোপ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই ঘটনার আসল সত্য প্রকাশে আনতে দাবি করা হচ্ছে তাদের তরফে। প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফার নির্বাচনের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। বিজেপি দাবি করেছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তার ফলেই এই ঘটনা। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করছে যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পরবর্তী ক্ষেত্রে উস্কানি মূলক মন্তব্যের কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে শীতলকুচি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহার প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন।