আহত বাঘ বেশি ভয়ঙ্কর, আমাকে ভয় দেখাতে পারবেন না, হুঁশিয়ারি মমতার

আহত বাঘ বেশি ভয়ঙ্কর, আমাকে ভয় দেখাতে পারবেন না, হুঁশিয়ারি মমতার

 

সিদ্ধার্থ বোস: ২১ জুলাই এর ভার্চুয়াল সমাবেশে অতীতের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে রাজ্য তথা দেশ বাঁচানোর আহ্বান জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷  আরও একবার সিপিএম এর দুর্নীতির কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বললেন, আজকে যে সন্ত্রাস, দাঙ্গা, হামলা চলছে, তার হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার ভার বাংলার।

এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর লড়াকু মনোভাবের পরিচয় আরও একবার পাওয়া গেল তাঁর কথায়। তিনি বললেন, “ আহত বাঘ বেশি ভয়ঙ্কর৷ আমাকে ভয় দেখাতে পারবেন না৷ কারণ, পুলিশের লাঠি খেয়ে, তাদের বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করেছি আমি, আমাকে ভয় দেখাতে আসবেন না।“ ইতিহাসের পাতায় লেখা ১৯৯৩ সালের আন্দোলন আজও মানুষের মনে গেঁছে রয়েছে। সেই আন্দোলনে শহিদদের স্মরণেই প্রতি বছর ২১ জুলাই পালিত হয় শহিদ দিবস৷  
২০১১ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সিপিএম-কে ধরাশায়ী করেছিল তৃণমূল৷ বিপুল ভোট পেয়ে রাজ্যের মসনদে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যবনিকা পড়েছিল ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের৷ সেই বছর বিধানসভা ভোটে তৎকালীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করেছিল রাজ্যের মানুষ৷ 

১৯৯১ সালে স্বচ্ছ ভোটের দাবিতে শুরু হয়েছিল কংগ্রেসের আন্দোলন৷ তাঁদের দাবি ছিল, কারচুপি করে ভোটে জিতেছে সিপিএম৷ আজ থেকে ২৭ বছর আগে, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার দাবিতে আন্দোলনে নামে যুব কংগ্রেস। তৎকালীন যুব কংগ্রেস সভাপতি  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহাকরণ অভিযানের স্লোগান ছিল, ‘সচিত্র ভোটার কার্ড ছাড়া ভোট নয়।’ ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছিল সংঘর্ষ৷ এরপর পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় যুব কংগ্রেসের ১৩ জন কর্মীর। তৃণমূল সুপ্রিমো এদিন বলেন, “ঠিক সেদিনের মতো আজ সারা দেশজুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বিজেপি৷ ঠিক সেদিনের মতো আজও আমাদের কর্মীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে, এসব করে ভয় পাওয়াতে পারবেন না। সিপিএম পারেনি বিজেপিও পারবেনা।’’

এই বছর করোনা আবহে ধর্মতলায় ২১ এর সমাবেশ করা সম্ভব হয়নি৷ তবে আগামী বছর ২১মে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর মানুষের বিপুল আশীর্বাদে ২১ জুলাই ঐতিহাসিক সভা হবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএম চলে গিয়েছে, বিজেপিও চলে যাবে, বাংলাকে শাসন করবে বাংলাই, কোনও গুজরাত নয়৷” তিনি বলেন, চারিদিকে শুধু সন্ত্রাস, দাঙ্গা, বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে৷ যা বন্ধ করতে হবে৷ সব শেষে রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “যাঁরা ভুল করে সিপিএম করছেন, যাঁরা ভুল করে বিজেপি করছেন, তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিন।“ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যুবসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে৷ মমতা বলেন, “আমি হয়ত একদিন থাকব না, কিন্তু আমি আমার যুব সমাজকে তৈরি করে দিয়ে যাব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 + nineteen =