বিজেপি কর্মী খুনে উত্তাল পশ্চিম বর্ধমান। সোমবার, বিজেপির বুথ প্রেসিডেন্ট সন্দীপ ঘোষের দেহ রূপগঞ্জের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। আধঘণ্টার জন্য দুর্গাপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। খুনের প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টা দুর্গাপুর বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
রবিবার রাতে, কাঁকসায় বিজেপির বুথ স্তরের বৈঠক ছিল। সেই মিটিং সেরে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন বিজেপি বুথ সভাপতি সন্দীপ ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সঙ্গীরাও। অভিযোগ, সাহেবগঞ্জের কাছে লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একদল দুষ্কৃতী তাঁদের ওপর চড়াও হয়। সন্দীপ ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। বেধড়ক মারধর করা হয় সন্দীপের সঙ্গী জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আহত হন আরও ৫ বিজেপি কর্মী। দুজনকেই নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা সন্দীপকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জয়দীপ। বেসসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন সন্দীপ। ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সন্দীপের বাবা বিজয় ঘোষ। ছেলে বিজেপি কর্মী হলেও, এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবেই পরিচিত সন্দীপের বাবা। পরিকল্পনামাফিক শাসকদলের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির কার্যকরী জেলা সভাপতি লক্ষ্ণণ ঘড়ুই। ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই, বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলেই এই হামলা ও খুন বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন দাসু। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। ময়নাতদন্তের জন্য বিজেপির বুথ প্রেসিডেন্টের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। এরপরেই তাঁর দেহ হটন রোড দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে আইন-শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাধা দেয় পুলিস। শুরু হয় পুলিস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি। প্রতিবাদে দেহ এসবি রোডে রেখে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। পরে পুলিসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।সামনেই লোকসভা ভোট। তার জন্য রাজ্য স্তরে যেমন বিজেপির রথযাত্রার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তেমনি জেলা ও ব্লক স্তরে নিয়মিত বৈঠক করছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। সেই বৈঠক সেরে ফেরার পথেই খুন হন বিজেপি কর্মী। খুনের পেছনে প্রকৃত কী কারণ তদন্ত করছে দুর্গাপুর থানার পুলিস।