কলকাতা: বিশ্বভারতী, উপাচার্য, অমর্ত্য সেন। বিগত কয়েক দিন ধরে একাধিক প্রসঙ্গ উঠছে এঁদের নিয়ে। একেবারে রাজনৈতিক তর্ক বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে। বিশ্বভারতীর জমি বিতর্ক নিয়ে ইতিমধ্যেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তো দেখেছেন বিজেপি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকেও। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, অমর্ত্য সেনকে অপমান বা হেনস্থা করার কোন ইচ্ছাই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের নেই। একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্য সরকার যেসব উপাচার্যকে নিয়োগ করেছে তারা সবাই তৃণমূলের তো? কিন্তু কেন এমন প্রশ্ন?
আসলে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নিয়োগ করেছে বিজেপি সরকার। পরবর্তী সময়ে জমি বিতর্কের ইস্যুতে একাধিকবার তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে। নিজের পদের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগের প্রসঙ্গ উঠতেই এখন পাল্টা প্রশ্ন করলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর স্পষ্ট জিজ্ঞাস্য, বিজেপি সরকার তাঁকে নিয়োগ করেছে বলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে রাজ্য সরকার যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগ করেছে তারা সবাই তৃণমূলের লোক তো? নিজের পদ এবং কাজের ব্যাপারে মুহুর্মুহু প্রশ্ন ওঠার কারণে তিনি যে ক্ষুব্দ তা এই কথা শুনে স্পষ্ট বোঝা যায়।একইসঙ্গে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পতাকা দেখা যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সে ব্যাপারেও তিনি স্পষ্ট জবাব দেন, যে জায়গায় দলীয় পতাকা দেখা যাচ্ছে সেটা রাজ্যের অধীনে, ক্যাম্পাসে কোনও রাজনৈতিক পতাকা নেই।
এদিকে এক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকার দিয়ে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন প্রসঙ্গে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারেও তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বভারতী এবং অমর্ত্য সেনকে নিয়ে যা খবর ছড়ানো হচ্ছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁর এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কোনো ইচ্ছাই নেই অমর্ত্য সেনের মতো কাউকে হেনস্থা করার কারণ তিনি শান্তিনিকেতনের গর্ব। যে খবর ছড়ানো হয়েছে তা একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি। উপাচার্যের কথায়, অমর্ত্য সেনের খ্যাতি জগৎ জুড়ে। তার মতো একজন ব্যক্তিকে হেনস্থা করার কোনও পরিকল্পনা কোনওদিন করেনি বিশ্বভারতী। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিতর্কিত জমি নিয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট জমির মধ্যে ৭৭ একর জমি কব্জা হয়েছে। অডিটে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। সেই জমির মধ্যে কিছু কিছু লোকের জমি রয়েছে যা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এবং এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে এ ব্যাপারে।