কলকাতা: কয়লা পাচারকাণ্ডে আরও কঠোর হচ্ছে সিবিআই। পাচারচক্রের ‘কিংপিন’ অনুপ মাজি ওরফে লালাকে পলাতক ঘোষণা করার পর এবার বিনয় মিশ্রকে পলাতক ঘোষণা করল সিবিআই আদালত। কয়লা পাচারকাণ্ডে এদিন কলকাতা, পুরুলিয়া, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ার মোট ১০ জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। বাঁকুড়ার মেজিয়ার তারাপুরের এক স্টিল ফ্যাক্টরিতেও এদিন হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। এই কারখানার প্রধান দফতর আবার কলকাতার লেনিন সরণিতে।
সিবিআই সূত্রে খবর, গতকাল রাতে কয়লা পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার শ্বশুর বাড়িতে হানা দেয় গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকরা। এর আগে অনুপ মাঝি এবং তার সঙ্গীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আসানসোলের বিশেষ আদালতে আবেদন করেছিল তারা। যদিও সেই নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এরই মাঝে বিনয় মিশ্রকে পলাতক ঘোষণা করে দিল সিবিআই আদালত। অন্যদিকে অনুপ মাঝির সূত্র ধরে আসানসোলে জয়দেব মণ্ডলের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। একইসঙ্গে লালার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীক গুরুপদ মাজির বাড়িতেও হানা দেওয়া হয়। কয়লা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এরা দুজন এমন অভিযোগ আছে।
আর কয়েক সপ্তাহ পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন এবং আর কয়েকদিন বাদেই তার দিন ঘোষণা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কয়লা পাচার থেকে শুরু করে গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই তত্পরতা বেড়েছে দেখার মত। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করেছে যে, বাংলায় নির্বাচন এলেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তরের তৎপরতা বেড়ে যায়। এবারও রাজ্য সরকারকে চাপে রাখার জন্য একই জিনিস ঘটানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে তারা কেন্দ্রীয় সরকার তাদের বিজেপির দিকেই আঙ্গুল তুলেছে। এর আগে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, কয়লা পাচার কাণ্ডে রাজ্যে তল্লাশি চালাতে গেলে অনুমতির প্রয়োজন নেই সিবিআইয়ের। একই সঙ্গে বলা হয়েছিল, কয়লা কাণ্ডে অভিযুক্ত এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে পারবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। একইসঙ্গে রেল এলাকার বাইরে তদন্ত করতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে রাজ্যকে এমন রায় দেওয়া হয়।