কলকাতা: বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের খেলা কার্যত শেষ। বিপুল ভোটে জয়লাভ করে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি, একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর অগাধ আস্থা রেখে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানকে ধরাশায়ী করল বাংলার মানুষ, অন্যদিকে তেমনি এই নির্বাচনে কার্যত ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল বাম ও কংগ্রেস।
ভোটের ময়দানে একগুচ্ছ নতুন মুখ এনে এবারে নজর কেড়েছিল সিপিআইএম। কিন্তু ইভিএম মেশিনে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল লাল পতাকা। কীভাবে হল শোচনীয় অবস্থা? রবিবার সন্ধ্যায় এই নিয়ে বিবৃতি দিলেন সিপিআইএমের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি জানিয়েছেন, “সংযুক্ত মোর্চা এই নির্বাচনে বিপর্যস্ত হয়েছে। কেন এই বিপর্যয় হল তা আমরা পরবর্তী সময়ে সংযুক্ত মোর্চার সমস্ত শরিকরা নিজ নিজ দলে আলোচনা করে ও তারপরে যৌথ পর্যালোচনা করে কারণ অনুসন্ধান করব। পরবর্তীকালে সেই অনুযায়ী আমরা শিক্ষা গ্রহণ করব।” তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিরাট জয় নিয়ে বিমানবাবু জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে এ কথা বলা যেতে পারে যে বিজেপি-কে পরাস্ত করার জন্য বাংলার মানুষের তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকেই তৃনমূল লাভবান হয়েছে।”
রবিবার সন্ধ্যায় একটি বিবৃতি জারি করে বিমান বসু জানিয়েছে, “এই নির্বাচনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা বিজেপির পরাজয়। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এরাজ্যে ১৮টি আসনে জয়লাভ করে বাংলা জয়ের বাসনা নিয়ে আরএসএস ও সংঘ পরিবারকে ব্যবহার করে এই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বেশ কিছু হেলিকপ্টার ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় দাপিয়ে বেরিয়েছিল। তারপরও বাংলার মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু বিজেপি বাংলার সমাজধারায় ক্ষত তৈরি করেছে। এর পরিণতিতে ভবিষ্যতে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতিতে ক্ষয়সাধন হতে পারে।”
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান আরও জানিয়েছেন, “সংযুক্ত মোর্চা এরপর সংবিধানের বিধি রক্ষা করা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত করা, ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করা এবং শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজির সংগ্রামকে বিস্তৃত ও শক্তিশালী করার দায়িত্ব পালন করবে।” নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার তরফ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিমানবাবু। গোটা রাজ্যে গণনা পরবর্তী সময়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন তিনি।