শিলিগুড়ি: আশঙ্কা আগেই ছিল৷ এবার সেই আশঙ্কার মেঘ পৌঁছে গেল খাস পুলিশের অন্দরে৷ পরিস্থিতি যে খুব একটা অনুকুল নয়, তা কার্যত পরিষ্কার৷ কেনান, পৃথক রাজ্যের দাবির আগুন ধিক ধিক করে জ্বলছিলই৷ এবার সেই আগুনে কার্যন্ত ঘি ঢালার আপেক্ষা৷ তৃণমূলের হাত ধরে ফের পাহাড়ে ফিরতে চলেছেন ৩ বছর ফেরার থাকা গুরুং৷ তবে, গুরুংয়ের পাড়াহে ‘ঘরওয়াপসি’ আনুষ্ঠানিক ভাবে কবে হবে, তা এখনও অজানা৷ সূত্রের খবর, পুলিশের চোখে ৩ বছর ফেরার থাকা ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’-সহ ১০৫টি মামলার মালিক বিমল গুরুং এখনও কলকাতায়! গ্রেফতারি তো দূর, ঢাকঢোল পিটিয়ে দেবীপক্ষের শুরুতেই খাস কলকাতার বুকে তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ার প্রস্তাব দিয়ে করেছেন সাংবাদিক বৈঠক৷ রাতারাতি টুইট করে গুরুংকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছে শাসক দল তৃণমূল৷ যদিও এই গুরুয়ের বিরুদ্ধেই ছিল তৃণমূলের চরম হুঁশিয়ারি৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটের নয়া ফর্মুলায় ‘শত্রু’ গুরং এখন ‘বন্ধ’! তবে, দেবীপক্ষে তৃণমূলের ‘বন্ধু’প্রাপ্তি ঘটলেও পাহাড়ে নতুন করে জমেছে আশান্তির মেঘ! যদিও তার পূর্বাভাস মিলেছে ‘মিছিল বনাম পাল্টা মিলিছের’ উত্তাপ৷
ইতিমধ্যেই পাহাড়জুড়ে বিমল বিরোধী হাওয়া বইতে শুরু করেছে৷ পাল্টা মিছিলও চলছে৷ কখন শান্তি মিছিলের নামে গুরুংয়ের বিরোধিতা, কখনও আবার গুরুংয়ের সমর্থনে পাল্টা মিছিল৷ গুরুং নিজের দুর্গে ফেরার আগেই তপ্ত হয়ে পাহাড়ের রাজনীতি৷ বিমল গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তন ঘটলে দার্জিলিং থেকে শুরু করে কালিম্পং নতুন করে যে অশান্তি ছড়াবে না, তা উড়িয়ে দিতে পারছে না পুলিশ সূত্রেও৷
২০১৭-র মাঝামাঝি সময় থেকে গা–ঢাকা দিয়ে থাকার পরে পুজোর মুখে ২১ অক্টোবর আচমকা কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করেন বিমল গুরুং৷ বিজেপির থেকে ‘প্রতারিত’ হওয়ার পর তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’-সহ ১০৫টি মামলার মালিক বিমল গুরুং৷ পুরোনো ‘শত্রুতা’ ভুলে নতুন ‘বন্ধ’ গুরুংকে রাতারিত ‘স্বাগত’ জানিয়েছে তৃণমূল৷ গুরুং-তৃণমূলের নতুন সমীকরণ রাতের ঘুম উড়িয়েছে পাড়াবাসীর একাংশের৷ পাহাড়ে চাপা উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ গুরুংয়ের ছবি-সহ মোর্চার পতাকা দেখা মিলেছে পাহাড়ে৷ সোনাদায় পাল্টা মিছিল করেছেন বিনয় তামাংপন্থীরাও৷
পুলিশ সূত্রের খবর, পাহাড়ে মিছিল-পাল্টা মিছিল উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে৷ ৩ বছর ফেরার থাকার পর গুরুংয়ের কলকাতা সফলের পরপর দার্জিলিং রেঞ্জের তরফে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে বলে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর৷ সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিমল গুরুংকে গোর্খা ভবনের আশেপাশে দেখা গিয়েছে বলে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পুলিশ সুপারকে তথ্য দেওয়া হয়েছে৷ তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলেও জানানো হয়েছে৷ গুরুং পাহাড়ে ফিরলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা যাতে দেখা না দেয়, সে দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ৷ গুরুং আত্মসমর্পণ করেন না কি পাহাড়ে ফিরবেন, সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে৷ প্রতিটি মামলার তথ্য ও কেস ডায়েরি তৈরি রাখতে বলা হয়েছে৷ নতুন করে পাহাড়ে আগুন না জ্বলে ওঠে সেদিকেও সতর্ক পুলিশ! গুরুং পাহাড়ে ফিরলে তাঁকে আদৌও গ্রেফতার করা হবে? না কি আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া দেওয়া হবে? নাকি ১০৫টি মামলা তুলে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি৷