কলকাতা: একুশের ভোটে ভেঙে চুরমার বাম-কংগ্রেস দূর্গ৷ আব্দুল মান্নান, সুজন চক্রবর্তী থেকে মহম্মদ সেলিম, নেপাল মাহাতো, মান বাঁচাতে ব্যর্থ বড় বড় নেতারা৷ ভোটে হারলেন সকলেই৷ বাম-কংগ্রেসের বড় মুখদের পরাজয়ের দিনে খানিকটা হলেও মান বাঁচালেন ছোট নেতারা৷ ঐশী থেকে দীপ্সিতা, সৃজন থেকে প্রতিউর, লড়াইয়ে নজর কাড়লেন৷ জামানতও রক্ষা করলেন৷
আরও পড়ুন- একদিনে বাংলায় ভাইরাস মুক্ত প্রায় ১৬,০০০! স্বস্তির আবহ দেশেও
বাংলা জুড়ে এখন সবুজ ঝড়৷ দেশে এই প্রথম হ্যাট্রিক করলেন কোনও মহিলা মুখ্যমন্ত্রী৷ বাংলার মার্কশিটে তৃণমূল ২১৩৷ বিজেপি ৭৭ এবং সংযুক্ত মোর্চা মাত্র ১৷ স্বাধীনোত্তর ভারতে এই প্রথম বঙ্গ বিধানসভায় একটি আসনও পেল না বাম-কংগ্রেস৷ ৩৪ বছর ধরে বাংলা শাসন করা বামেদের কাছেও এটা লজ্জার পরাজয়৷ হুগলীর চাঁপদানি কেন্দ্রে পরাজিত বিধানসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান৷ যাদবপুর কেন্দ্রে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী পৌঁছে গেলেন তৃতীয় স্থানে৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গড় বহরমপুরে পরাজিত বিধানসভায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী৷ পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডিতে হারলেন কংগ্রেসের নেপাল মাহাতো৷ নেমে গেলেন তৃতীয় স্থানে৷ আবার আলিপুরদুয়ারে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে গেল প্রাক্তন সাংসদ দেবপ্রসাদ রায়ের৷ একের পর এক পরাজিত হলেন শিলিগুড়ির মেয়র ও প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, চন্ডীতলা কেন্দ্রে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য হম্মদ সেলিম৷ রায়দিঘিতে হারের হ্যাট্রিক করলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়৷ রানিবাঁধে পরাজিত দেবলীনা হেমব্রম৷ শালবনিতে জামানত জব্দ হল সুশান্ত ঘোষের৷
ইতিহাসে এই প্রথম আবু বরকত গনি খান চৌধুরীর মালদা এবং অধীর গড় মুর্শিদাবাদের মানুষ খালি হাতে ফেরাল কংগ্রেসকে৷ বাম-কংগ্রেসের বড় মুখদের এই ব্যর্থতার মাঝে দাগ কাটল ছোটদের লড়াই৷ জামুরিয়ায় ঐশী ঘোষ, হাওড়া বালিতে দীপ্সিতা ধর, সিঙ্গুরে সৃজন ভট্টাচার্য, কামারহাটিতে সায়নদীপ মিত্র, খড়দায় দেবজ্যোতি দাস, বর্ধমান দক্ষিণে পৃথা তা, ডায়মন্ড হারবারে প্রতীক উর রহমান কিছুটা হলেও লড়াই করলেন৷ রক্তক্ষরণ হতে হতে কার্যত রক্ত শূন্য হয়ে গেল বাম-কংগ্রেস৷
আরও পড়ুন- আদর্শ নির্বাচন বিধি প্রত্যাহার! অনির্দিষ্টকাল স্থগিত বাংলার ২ কেন্দ্রের নির্বাচন!
২০১৬ সালেও জোট বেঁধে লড়েছিল বাম-কংগ্রেস৷ দখল করেছিল ৭৭টি আসন৷ ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তারা৷ ২০১৯ এর লোকসভায় বামেরা ৭ ও কংগ্রেস ৫ শতাংশে নেমে আসে৷ ২০২১-এর মার্কশিট বলছে, বামেরা ৫ আর কংগ্রেস পেয়েছে ৩ শতাংশ ভোট৷ বাম-কংগ্রেসের এই পরাজয়ের জন্য তাদেরই দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যীয়৷ তাঁর কথায় বিজেপি’র কাছে নিজেদের বিক্রি করেই সাইন বোর্ড হয়ে গিয়েছে৷